পরাজিত ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ঝুঁকি
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণাকে হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প নির্বাচন নিয়ে ‘ভিত্তিহীন’ জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন।
সিএনএন জানায়, আফগান সরকার এ ঘোষণার পর মনে করছে এতে সেখানে তালেবানরা আবার হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। রিপাবলিকান কেউ কেউ এ বিষয়ে ট্রাম্পের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য অ্যাডাম কিনজিংগার এই ঘোষণাকে ‘পরবর্তী প্রশাসনকে ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
আফগানিস্তান যুদ্ধে অংশ নেওয়া সাবেক মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য কিনজিংগার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে এখন যত সেনা আছেন, তারা নিজেদের রক্ষা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে পারবে না।
তিনি বুধবার সিএনএনকে বলেন, ‘আড়াই হাজার সেনা কেবল নিজেদের রক্ষার জন্য যথেষ্ট।’
এ দিকে ইরাক থেকেও ট্রাম্প সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে এ বিষয়ে জোট বাহিনীর দায়িত্বে থাকা মার্কিন জেনারেল ও ইরাক সরকারের মধ্যে আলোচনা নিরাপত্তা জনিত জটিলতার কারণে ধীর গতিতে আগাচ্ছে।
এ সপ্তাহের শেষে সৌদি আরবের আয়োজনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক শক্তির জি-২০ সম্মেলন হবে। ট্রাম্প আর কী কী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এ সম্মেলন শেষে হয়তো তা কিছুটা বোঝা যাবে।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এই সম্মেলন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। এতে তিনি ভিডিওলিংকের মাধ্যমে বক্তব্য দিবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও উপস্থিত থাকবেন।
এ দিকে, ইয়েমেনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে সৌদি আরবের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সৌদি যুদ্ধ বিমানের আঘাতে ইয়েমেনের সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। পাল্টা জবাব হিসেবে হুতিরা সৌদি রাজধানী রিয়াদ ও অন্যান্য শহরগুলিতে ইরানি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। মার্কিন-প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে সেখানে।
ইয়েমেনে কর্মরত মানবাধিকারকর্মীরা ও সহায়তা দানকারী সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। তারা জানিয়েছে, হুতিদের যুক্তরাষ্ট্র 'জঙ্গি' আখ্যা দেওয়ায় সেখানে খাদ্য, জ্বালানী ও অর্থ সংকটের পাশাপাশি অনেক লোকের জীবন ঝুঁকিতে আছে।
ইয়েমেনে সহায়তাকারী সংস্থা নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল জ্যান এগল্যান্ড মার্কিন সরকারকে সেখানে মানবিক কাজের সুযোগ ও নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ পর্যায়ে আন্তর্জাতিকভাবে কতটা ক্ষতি হতে পারে, তা হয়তো এ সপ্তাহের শেষে জি-২০ দেশের নেতাদের বৈঠকেই বোঝা যাবে।
Comments