‘আউট অব দ্য বক্স’ ক্রিকেটই বরিশালের ভরসা
দল বানাতে বিসিবির বেঁধে দেওয়া বাজেটের থেকেও অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ফরচুন বরিশালের। তবে তা করেও খাতায়-কলমে সেরাদের কাতারে নাম উঠছে না তাদের। খোদ অধিনায়ক তামিম ইকবালই বলছেন, তাদের ভুল হয়েছে প্লেয়ার্স ড্রাফটে! তাই কেবল ‘আউট অব দ্য বক্স’ খেললেই আসতে পারে সাফল্য।
জাতীয় দলের তারকা
সব সংস্করণ মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলে খেলে থাকেন বা বিবেচনায় আছেন এমন খেলোয়াড় বরিশালের আছে পাঁচজন- তামিম ইকবাল, আফিফ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি। তবে যদি টি-টোয়েন্টির হিসাব করা হয়, তবে কেবল অধিনায়ক তামিম আর অলরাউন্ডার আফিফই পান বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা।
উঠতি তারকা
এক্ষেত্রে প্রথমেই নাম আসবে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের। তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করার সুযোগ পাবেন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান পরিস্থিতি বিচার করে খেলার সামর্থ্য রাখেন। তৌহিদ হৃদয় সবশেষ বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে আলো ছড়িয়েছেন। তবে সেটা ছিল ৫০ ওভারের ম্যাচ। থিতু হতে কিছুটা সময় লাগে তার। টি-টোয়েন্টিতে সেই সময়টা নিশ্চিতভাবেই পাবেন না তিনি।
শক্তি-দুর্বলতা
বরিশালের শক্তির জায়গা ধরা যেতে পারে তাদের ছন্দে থাকা পেস আক্রমণকে। তাসকিন বেশ কিছু দিন ধরেই আছেন সেরা অবস্থায়। ধারাবাহিকভাবে ভালো করা এই পেসারের কাছ থেকে এই টুর্নামেন্টেও বড় ঝলক মিলতে পারে। প্রেসিডেন্ট’স কাপে নিজেকে চিনিয়ে আলোয় এসেছেন তরুণ সুমন খান। খুব গতিময় না হলেও উইকেট এনে দিতে পারেন। এই দুজনের সঙ্গে দুইদিকে স্যুয়িংয়ে ওস্তাদ অভিজ্ঞ আবু জায়েদের সমন্বয় বেশ ভালো। আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার কামরুল ইসলাম রাব্বিও।
এই দলের দুর্বলতা হয়ে দেখা দিতে পারে ব্যাটিং। বিশেষ করে, টপ অর্ডারে তামিম ও আফিফকে রাখলে মিডল অর্ডার বেশ দুর্বল। ইরফান শুক্কুরকে উপরের দিকে খেলালে শেষ দিকের ঝড়ের জন্য কেউ নেই। ফলে হৃদয়ের উপর মিডল অর্ডারে ভালো করার অনেক চাপ থাকবে। সেই সঙ্গে ওপেনার সাফ হাসানকে কোন পজিশনে তারা খেলাবে, এটাও কৌতূহলের বিষয়।
ঘরোয়া পারফর্মার
ঘরোয়া পারফর্মার হিসেবে সেরা একজনকেই নিয়েছে বরিশাল। দারুণ ছন্দে থাকা ইরফান শুক্কুর হতে পারেন দলের ট্রাম্পকার্ড। তবে এই জায়গায় স্পিন আক্রমণে ভুগতে হতে পারে তাদের। সেরা অবস্থায় না থাকা সোহরাওয়ার্দি শুভর জায়গায় এনামুল হক জুনিয়রের মতো কাউকে বিবেচনায় আনা যেত কিনা সেই প্রশ্ন ওঠার সুযোগ আছে। অবশ্য সে ঘাটতি পুষিয়ে দিতে অফ স্পিনে মেহেদী হাসান মিরাজ আর লেগ স্পিনে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব থাকছেন।
এক্স-ফ্যাক্টর
আগ্রাসী ব্যাটিং, কার্যকর স্পিন আর দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং মিলিয়ে আফিফ হোসেন দারুণ একটি প্যাকেজ। এই দলের এক্স-ফ্যাক্টর হতে পারেন তিনি।
প্রত্যাশা-লক্ষ্য
অধিনায়ক তামিম স্পষ্টই বলেছেন, দল নিয়ে তার খচখচানি আছে। সেজন্য ভিন্ন চিন্তায় চমকে দেওয়ার আশায় আছেন তিনি, ‘যে দলটা আছে, আমাদের সফল হতে হলে আউট অব দ্য বক্স ক্রিকেট খেলতে হবে। স্বাভাবিক যেভাবে পরিকল্পনা বানিয়ে খেলা হয়, সেভাবে করলে জেতাটা কঠিন হবে আমাদের জন্য। যদি আউট অব দ্য বক্স চিন্তা করি, অন্য দলকে চমকে দিতে পারি, তাহলে সম্ভব। আমার এখানে দুই-তিনজন যাদের নিয়ে কেউ আশা করছে না, তারা ভালো করলে যেকোনো কিছুই সম্ভব।’
‘আমার নিজের পারফরম্যান্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমার অধিনায়কত্ব বাদ দেন, আমি যদি রান করি, দলকে অবশ্যই তা অনুপ্রাণিত করবে। হয়তোবা পুরো টুর্নামেন্টে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করতে হবে। যদি আপনার রিসোর্স কম থাকে, তাহলে ওভাবে চিন্তা করে, পরিস্থিতি বিচার করে খেলতে হবে।’
ফরচুন বরিশাল: তামিম ইকবাল, আফিফ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, ইরফান শুক্কুর, মেহেদী হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, তৌহিদ হৃদয়, তানবির ইসলাম, সুমন খান, সাইফ হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, পারভেজ হোসেন ইমন, কামরুল ইসলাম রাব্বি, আবু সায়েম, সোহরাওয়ার্দি শুভ।
Comments