এখনও বহু দূরে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা
অনুমোদনের দুই মাস পরেও নির্ধারিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করতে পারেনি সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কিট সংগ্রহের কাজ শেষ হয়নি বলে এই বিলম্ব।
আরও বেশি পরীক্ষা এবং দ্রুত ফলাফল নিশ্চিত করতে অ্যান্টিজেন ভিত্তিক পরীক্ষা কিটের অনুমোদন দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র মো. হাবিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে কিট সংগ্রহের কাজ চলছে। কিট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যান্টিজেন ভিত্তিক পরীক্ষা শুরু করব।’
সূত্র জানায়, এখনও কোনো প্রতিষ্ঠানকে কিট আমদানি করার অনাপত্তিপত্র দেয়নি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। দেশে কোনো মেডিকেল ডিভাইস আমদানি করতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনাপত্তিপত্র বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল। তবে এ পরীক্ষা প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ।
জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির দেওয়া সুপারিশ অনুসরণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা শেষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যান্টিজেন ভিত্তিক পরীক্ষা কিটের অনুমোদন দেয়। এর লক্ষ্য ছিল ৩৯টি সরকারি হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটে, যেখানে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সুবিধা নেই, অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
দেশে ১১৭টি অনুমোদিত পরীক্ষাগারে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার করোনা পরীক্ষা হচ্ছে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে। জনসংখ্যার বিবেচনায় পরীক্ষার এই সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই কম।
প্রাথমিকভাবে যেসব জেলা সদর হাসপাতালে আরটি-পিসিআর সুবিধা নেই সেখানে এবং বিশেষায়িত হাসপাতালে গুরুতর রোগীদের চিকিত্সার সময় অ্যান্টিজেন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নমুনা হিসেবে স্যালাইভা নেওয়া হয় এবং পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় নমুনায় জীবাণু আছে কিনা। ফলাফল পেতে সাধারণত ১৫ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ এবং ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অ্যান্টিজেন ভিত্তিক পরীক্ষা বাড়িয়েছে।
পিসিআর বিশ্লেষণের চেয়ে এই পরীক্ষার নির্ভুলতার মান কম হলেও এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায় এবং পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই ফলাফল জানা সম্ভব হয়।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো অ্যান্টিজেন কিট অনুমোদন পেতে হলে ৯০ শতাংশ সংবেদনশীল এবং ৯৫ শতাংশ নির্দিষ্ট ফলাফল দিতে হবে। বিশ্বে মাত্র দুই থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এই মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে প্রায় দুমাস ধরে অন্তত তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অ্যান্টিজেন কিটের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পরীক্ষা চালাচ্ছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তার মতে, একটি কিট ৮০ শতাংশেরও বেশি সংবেদনশীলতা দেখিয়েছে। বর্তমানে আইইডিসিআর দ্বিতীয় কিটের ট্রায়াল করছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
গত বুধবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘আমাদের বিচারের ফলাফল কী সেটা বিবেচনার বিষয় না। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী এফডিএর অনুমোদন প্রাপ্ত যেকোনো কিট আমদানি করা যায়।’
Comments