'রাগ নিয়ে পৃথিবী ছেড়েছেন বাদল রায়'
'সে (বাদল রায়) ফুটবল অনেক ভালোবাসতো। এ খেলাটি ভালোবাসার কারণে হয়তো সে পরিবারকেও সে অর্থে সময় দিতে পারেনি।' -বাদল রায় সম্পর্কে এমনটাই বললেন তার বন্ধু জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কোচ গোলাম সারওয়ার টিপু। তাতে একটা কথা স্পষ্ট ফুটবলকে কতটা পছন্দ করতেন বাদল রায়। সেই তিনি দেখেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের ধ্বংসাবস্থাও।
আশির দশকে বাদল রায়রা যখন ফুটবল খেলতেন তখন এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান বেশ দৃঢ়ই ছিল। সেই অবস্থা থেকে এখন তলানিতে পৌঁছেছে দেশের ফুটবল। রাগ তো তার হওয়ারই কথা।
কিছু দিন আগেও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে সভাপতির পদে লড়ে চেয়েছিলেন ফুটবলের কাঠামো ঠিক করতে। কোনো এক অজানা কারণে পরে সরে দাঁড়ান। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগের দিন আবার নাটকীয়ভাবে ফিরে আসেন। এ নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে।
বাদল রায় পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেওয়ার পর তাই নিজের কষ্ট লুকাতে পারেননি এক সময়ের সতীর্থ হাসানুজ্জামান খান বাবলু, 'সে আমার ছোট ছিল কিন্তু আমার বন্ধুর মতোই ছিল, সে সবসময়ই আমাকে নানা অনুসন্ধান করত। রায়ের সঙ্গে আমার প্রায় ৩০/৩৫ বছরের স্মৃতি রয়েছে, তাকে ক্রীড়াঙ্গন ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। সে রাগ নিয়ে পৃথিবী ছেড়েছে।'
রোববার (২২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় না ফেরার দেশে চলে যান আশির দশকের মাঠ মাতানো সাবেক এই তারকা। তিনি লিভার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। অবশ্য গুরুতর অসুস্থ ছিলেন আগে থেকেই। গত ৫ নভেম্বর রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হয়েছিলেন বাদল। তবে তার অবস্থার অবনতি হলে ১১ নভেম্বর তাকে নেওয়া হয় স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে। শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে জিততে পারেননি বাদল। ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের এ প্রিয়মুখ।
'তার লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ার পর চিকিৎসকরা আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। ক্যান্সার তার শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করেছিল। কিডনিতে ডায়ালাইসিস করার জন্য তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তবে মেশিনের সমস্যার কারণে করা যায়নি। তারপরে গতকাল রাতে তাকে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল স্থানান্তর করা হয় যেখানে সে আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।।'- বলেন বাবলু।
অনেক দুঃখ ও রাগ নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া বাদল রায়ের কিছু করতে না পারার আক্ষেপ পড়াচ্ছে তার আরেক সতীর্থ ও বন্ধু, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আব্দুল গাফফারকেও, 'আমার বন্ধু চলে গেল এবং আমি তার জন্য কিছুই করতে পারলাম না শুধুমাত্র তার মুখ দেখা ছাড়া।'
Comments