বিপর্যয়ে নেমে শেখ মেহেদী-নুরুলের ব্যাটে ঝড়
ভালো শুরুর পর হুট করেই পথ হারিয়ে ডুবে যাওয়ার অবস্থায় চলে গিয়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। শেখ মেহেদী হাসান আর নুরুল হাসান সোহানের আগ্রাসী এক দারুণ জুটি ম্যাচে ফেরায় তাদের। শুরুতে আনিসুল ইসলাম ইমনে আর পরে এই দুজনের ব্যাটে চড়ে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে তারা।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
দলের হয়ে ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন শেখ মেহেদী। ২০ বলে ৩৯ করেন নুরুল, ২৩ বলে ৩৫ আসে আনিসুলের ব্যাট থেকে।
টস হেরে বেশ ভালো উইকেটে নেমে জুতসই শুরু পায় রাজশাহী। অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে নামেন তরুণ আনিসুল। উদ্বোধনী জুটিটা আশা জাগিয়েও থেমে যায় শান্তর ভুলে। নাসুম আহমেদের বলে লং অন দিয়ে এক ছক্কা মারার পর আরেক ছক্কার চেষ্টায় ফেরেন তিনি।
রনি তালুকদারও এসে টিকতে পারেননি। মুক্তার আলির বলে মিড অনে ধরা দেন সহজ ক্যাচে। অনেকের চোখ ছিল চারে নামা মোহাম্মদ আশরাফুলের দিকে। দলের শুরু ভালো হওয়ায় মঞ্চ ছিল সহায়ক। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি অভিজ্ঞ এই তারকা।
৯ বলে ৫ রান করা আশরাফুল ফেরেন নাঈম শেখের দুর্দান্ত ক্যাচে। মুক্তারের বলে স্কয়ার কাট করেছিলেন তিনি। পয়েন্টে দাঁড়ানো নাঈম ডানদিকে লাফিয়ে এক হাতে জমান চোখ ধাঁধানো ক্যাচ।
আনিসুল থিতু হয়ে গিয়েছিলেন, খেলছিলেন দারুণ। হরহামেশা এমন মঞ্চে খেলার সুযোগ মেলে না তার। তবে সুযোগের পূর্ণতা দেওয়া হয়নি তারও। নাঈম হাসানের বল এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে বাজেভাবে স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান। ৩৫ রানের ইনিংসে আনিসুল মারেন ৫ চার আর ১ ছক্কা।
ওই ওভারেই পড়ে যায় আরেক উইকেট। শর্ট পয়েন্টে ঠেলে এক রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান ফজলে মাহমুদ। এক পর্যায়ে ৪ ওভারেই ৪০ রানে পৌঁছে গিয়েছিল রাজশাহী। দশম ওভারে গিয়ে রানের গতি মন্থর হওয়ার সঙ্গে ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে তারা।
এরপরই জুটি বাধেন নুরুল-শেখ মেহেদী। ৫১ বলেই তারা আনেন ৮৯ রান। দুজনই ছিলেন আগ্রাসী। চার-ছক্কায় রান বাড়িয়েছেন দ্রুত। শেখ মেহেদীর ব্যাটিং ছিল দেখার মতো। স্লগ সুইপে বিশাল ছক্কা মেরেছেন। কব্জির ব্যবহার করে দারুণ বল করা রুবেল হোসেন ডেলিভারিও উড়িয়েছেন সীমানার ওপারে।
কিপার ব্যাটসম্যান নুরুল সারাক্ষণ ক্রিজে ছিলেন চনমনে। বাজে বল কাজে লাগাতে করেননি ভুল। প্রায় দুইশ স্ট্রাইক রেটে ২০ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ করে শেষ হয় নুরুলের ইনিংস। ৩১ বলে ফিফটি তুলে নেওয়া শেখ মেহেদীও তিন বল পর ধরেন তার পথ। মেহেদী হাসান রানার বলে ছক্কা পেটাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন তিনি।
ইনিংসের শেষ পর্যন্ত এই দুজন টিকতে না পারায় আরেকটু রান বাড়ানোর আক্ষেপ করতেই পারে রাজশাহী। ঢাকার হয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নজর কাড়েন মুক্তার। ৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৬৯/৯ (শান্ত ১৭, ইমন ৩৫, রনি ৬, আশরাফুল ৫, ফজলে মাহমুদ ০, নুরুল ৩৯, শেখ মেহেদী ৫০, ফরহাদ ১১*, আরাফাত ০, মুগ্ধ ০, ইবাদত ০*; রুবেল ০/২৯, মেহেদী রানা ১/৩১, নাসুম ১/৪১, মুক্তার ৩/২২, নাঈম ১/৩২, সাব্বির ০/১১)।
Comments