আবার বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত আমেরিকা: বাইডেন

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারও বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
Joe Biden
ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে এক অনুষ্ঠানে জো বাইডেন। ২৪ নভেম্বর ২০২০। ছবি: রয়টার্স

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারও বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো মিত্রদের নিয়ে আবারও একসঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছেন বাইডেন।

আগামী ২০ জানুয়ারির দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্পের ‘একতরফা জাতীয়তাবাদ’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী এ রাজনীতিক।

গতকাল ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে এক অনুষ্ঠানে নিজের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা দলের কর্মকর্তাদের নাম জানিয়ে বাইডেন বলেছেন, ‘এই দলের মাধ্যমে এটাই প্রতিফলিত হতে যাচ্ছে যে ‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’।

নিজের বেছে নেওয়া কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এটা সেই দল যার মাধ্যমে প্রতীয়মান হবে যে আমেরিকা ফিরে আসছে এবং পিছু না হটে বিশ্বকে আবারও নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। আবারও টেবিলে প্রধান হিসেবে বসে শত্রুদের মুখোমুখি হতে ও মিত্রদের খারিজ না করতে প্রস্তুত। নিজেদের মূল্যবোধগুলোর জন্য দৃঢ় পায়ে দাঁড়াতে প্রস্তুত।’

গত নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী এ ডেমোক্র্যাট নেতা এখন পর্যন্ত অ্যান্টনি ব্লিনকেন, জন কেরিসহ যে কয়েকজন কর্মকর্তাকে বেছে নিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই ওবামা প্রশাসনে কোনো না কোনো দায়িত্বে ছিলেন।

এদিকে, ডেমোক্রেট প্রার্থীতার দৌঁড়ে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা দুই সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও এলিজাবেথ ওয়ারেন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

বাইডেন জানিয়েছেন, কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে রিপাবলিকানদের আধিপত্য ঠেকাতে ওই দুই জনের ভোট তার জন্য খুবই জরুরি।

ট্রাম্প তার চার বছরের শাসনামলে ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে পুরনো মিত্রদের ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন।

সামরিক জোট ন্যাটোর অন্য সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব, মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যবিরোধ, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি ও সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসা ও কর্তৃত্ববাদী শাসকদের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল।

মেয়াদের শেষ বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চীনের বিবাদও ছিল চোখে পড়ার মতো। এ বছর করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণ, হংকং, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে একের পর এক কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির দেশ।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চার বছর আগে ডেমোক্রেটরা যখন হোয়াইট হাউসে ছিলেন, সে তুলনায় পৃথিবী এখন অনেকখানিই বদলে গেছে। বিশ্বজুড়ে চীনের ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, রাশিয়ার প্রভাবও বেড়েছে অনেক।

অন্যদিকে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সংস্থা থেকে সরে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব একটু একটু করে কমছে। দেশের ভেতরে নানা সহিংসতা ও জটিলতা যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক কর্তৃত্বেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেনের নতুন প্রশাসনকে তাই ট্রাম্পের রেখে যাওয়া অনেক ক্ষত মেরামতের দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago