ব্যাটিং ব্যর্থতায় আরও একটি হার মুশফিকদের
এমন নয় যে উইকেটে বড় কোনো জুজু রয়েছে। প্রতিপক্ষ বোলার তালিকায় নেই খুব বড় কোনো নাম। কিন্তু তারপরও মিরপুরে এদিন তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে গেছে বেক্সিমকো ঢাকার ব্যাটিং। নাহিদুল ইসলাম ও মোসেদ্দেক হোসেন সৈকতের মতো বোলারদের বিপক্ষেই পেরে ওঠেনি তারা। আর মূল কারণই ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের কাছে রীতিমতো উড়ে গেছে ঢাকা। ৫৫ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটের বিশাল হার মানে দলটি। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারল ঢাকা। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় পায় চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের বোলাররা এদিন শুরু নিয়েই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। আর বাকি কাজটা করেছেন ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। উইকেট পতনের মিছিলে যোগ দেন দলের ব্যাটসম্যানরা। দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল তিনজন ব্যাটসম্যান। ওপেনার নাঈম ইসলাম বলার মতো ৪০ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন। অন্যথায় ঢাকার হারটা হতে পারতো আরও বড়।
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম অভিজ্ঞ নাম। দেশ সেরা ব্যাটসম্যানও মানা হয় তাকে। আর জাতীয় দলের জার্সিতে সাব্বির রহমান খেলেছেন একশর বেশি ম্যাচ। কিন্তু তাদের মতো ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিতে পারেননি।
উইকেটে নেমে প্রথম বলটি রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছেন মুশফিক। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। নাহিদুলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। সাব্বির যেন নিজের মধ্যেই নেই। টানা ৯টি বল ডট দেওয়ার পর খেলতে গেলেন তেড়েফুঁড়ে। ক্যাচ দেন কভারে। অথচ এ দুই ব্যাটসম্যানের দিকে তাকিয়ে ছিল দলটি।
এছাড়া তরুণরাও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। তানজিদ হাসান, শাহাদাত হাসানরাও উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। সর্ব সাকুল্যে তাই ৮৮ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। ২২ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় দলটি।
দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম দুইজনই অসাধারণ বোলিং করে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মোসাদ্দেকের শিকারও দুটি। তবে দলের মূল স্পিনার তাইজুল ইসলামই ছিলেন কিছুটা ব্যতিক্রম। উইকেট ২টি পেলেও কিছুটা খরুচে ছিলেন তিনি। সতীর্থ কেউই ওভার প্রতি সাড়ে চারের বেশি না দিলেও ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়েছেন এ স্পিনার।
৮৯ রানের সাদামাটা লক্ষ্য পেয়েও শুরুটা আগ্রাসী ঢঙ্গেই করে চট্টগ্রাম। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও লিটন দাস স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাটিং করে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। ৭৯ রানের ওপেনিং জুটি গড়ার পর নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে যান লিটন। তবে ততক্ষণে চট্টগ্রামের জয় প্রায় নিশ্চিত। বাকি কাজটা মুমিনুল হককে নিয়েই শেষ করেন সৌম্য।
২৯ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। আরেক ওপেনার লিটন করেন ৩৪ রান। ৩৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ১৬.২ ওভারে ৮৮ (তানজিদ ২, নাঈম ৪০, সাব্বির ০, মুশফিক ০, আকবর ১৫, শাহাদাত ২, রনি ০, মুক্তার ১২, নাসুম ৮, রুবেল ০, রানা ০*; নাহিদুল ১/১৩, শরিফুল ২/১০, মোস্তাফিজ ২/১৩, মোসাদ্দেক ২/৯, তাইজুল ২/৩২, সৌম্য ১/২)।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১০.৫ ওভারে ৯০ (লিটন ৩৪, সৌম্য ৪৪*, মুমিনুল ৮*; রুবেল ০/২৩, রানা ০/৩০, রনি ০/১৫, মুক্তার ০/১০, নাসুম ১/৫, শাহাদাত ০/৭)।
ফলাফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)
Comments