ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ী হামলায় নিহত
ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহ রাজধানী তেহরানের কাছে আততায়ী হামলায় নিহত হয়েছেন।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার রাতে বিবিসি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তেহরানের দামাবন্দ এলাকায় ফখরিজাদাহর ওপর হামলার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এই হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে একে কোনো ‘রাষ্ট্রের মদদে’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা তাকে ‘ইরানি বোমার জনক’ হিসেবে অভিহিত করতেন।
ফখরিজাদাহ ইরানের সর্বাধিক খ্যাতিমান পরমাণু বিজ্ঞানী এবং অভিজাত ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের সিনিয়র কর্মকর্তা।
তিনি দীর্ঘকাল ধরে ইরানের অস্ত্র কর্মসূচিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।
২০১৮ সালে ইসরাইলের প্রকাশিত একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির নেতৃত্ব দিতেন ফখরিজাদাহ।
২০১৫ সালে নিউইয়র্ক টাইমস ম্যানহাটন প্রকল্পের পরিচালক জে রবার্ট ওপেনহাইমারের সঙ্গে তার তুলনা করেছিল। এ প্রকল্প থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি হয়েছিল।
Terrorists murdered an eminent Iranian scientist today. This cowardice—with serious indications of Israeli role—shows desperate warmongering of perpetrators
Iran calls on int'l community—and especially EU—to end their shameful double standards & condemn this act of state terror.— Javad Zarif (@JZarif) November 27, 2020
পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের ‘গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির’ পেছনে ফখরিজাদাহের ভূমিকা আছে বলে সবসময় উল্লেখ করেছে।
সম্প্রতি ইরানের ইউরেনিয়ামের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মধ্যেই মোহসেন ফখরিজাদাহের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
এর আগে, ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চার জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরান সেসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ইসরাইলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছে।
২০১৮ সালে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক বক্তব্যে ফখরিজাদাহের নামটি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
তবে, মোহসেন ফখরিজাদাহের নিহতের খবরে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।
মোহসেন ফখরিজাদাহ ১৯৮৮ সালে ইরানের ফিজিক্স রিসার্চ সেন্টারের দায়িত্ব নেন। পরে তিনি অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এই ইনস্টিটিউট থেকেই ইরানের পারমাণবিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে (আইএইএ) তিনি কখনও সাক্ষাত্কার দেননি। তবে, তাদের একটি প্রতিবেদনে তার নাম পাওয়া যায়।
Comments