হত্যার পর পদ্মায় ফেলে দেওয়া হয় জিসানের মরদেহ

আদালতে আসামিদের জবানবন্দি
তানভির আহাম্মেদ জিসান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মোহাম্মদপুরের কলেজছাত্র তানভির আহাম্মেদ জিসানকে হত্যার পর মরদেহ পদ্মায় ফেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবালয় থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশীষ কুমার সান্নাল জানান, আদালতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করলে শুক্রবার দুই জনকে দুই দিনের রিমান্ডে দেন আদালত। 

জিসান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জের শিবালয়ের পাচুরিয়া এলাকার রাব্বি হোসেন প্রান্তিক (১৮), ছোট শাকরাইল গ্রামের নাজমুল (১৮), একই গ্রামের শরিফ হোসেন (১৮), আজিজুল (১৮) ও ঢাকাইজুড়ার হাসিবুল হাসান (১৮)।

নিহত জিসান ঢাকার মোহাম্মদপুর কাদেরাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী শাহীন আলমের ছেলে। মোহাম্মদপুর হাজী মুকবুল হোসেন ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল জিসান।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর তানভির আহাম্মেদ (জিসান) ঢাকা থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। তারপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।  গত ২৩ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় জিসানের পরিবার একটি জিডি করেন। এদিকে, পুলিশ গত ১৮ নভেম্বর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের নিকটবর্তী পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম মরদেহ দাফন করে। গত ২৫ নভেম্বর জিসানের পরিবার মর্গে যুবকের জামা-কাপড় দেখে নিশ্চিত করেন ওই মরদেহ জিসানের। এ ঘটনায় জিশানের বাবা শিবালয় থানায় গত গত ২৬ নভেম্বর হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওই রাতেই থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হাসিবুল হাসান ও আজিজুলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) তানিয়া সুলতানা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন, জিসানের কয়েক বন্ধু রাব্বির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে অপমান করে। এতে ক্ষিপ্ত রাব্বি কৌশলে জিসানকে গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে তার এলাকায় বেড়াতে আনে। ওইদিন বিকেলে দুটি মোটর সাইকেলে করে জিসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। সন্ধ্যায় পাটুরিয়া ফেরি ঘাট ট্রাক টার্মিনালের কাছে পদ্মা পাড়ে রাব্বি ও তার সহযোগীরা জিসানকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর হাত-পা বেঁধে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়।

খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে জিসানের পরিবার। জিসানের মা সামিয়া বেগম আদালতে আহাজারি করে বলেন, ‘আমার মতো আর কারো যেন মায়ের বুক খালি না হয়।’

Comments

The Daily Star  | English

No scope to avoid fundamental reforms: Yunus

Conveys optimism commission will be able to formulate July charter within expected timeframe

4h ago