জাপানে করোনায় মোট মৃত্যুর চেয়ে এক মাসে আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি

প্রতীকী ছবি। (সংগৃহীত)

জাপানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যতজনের মৃত্যু হয়েছে, তার চাইতেও বেশি মানুষ গত এক মাসে আত্মহত্যা করেছেন। দেশটির ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির তথ্যমতে, গত অক্টোবরে দেশটিতে আত্মহত্যা করেছেন মোট ২ হাজার ১৫৩ জন। অন্যদিকে, দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ২ হাজার ৮৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

গতকাল শনিবার সিএনএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন জানায়, জাপানের এই পরিসংখ্যান মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মহামারির প্রভাব সম্পর্কে অন্য দেশগুলোকেও ধারণা দেবে এবং কারা আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছেন সেটি চিহ্নিত করতেও সাহায্য করবে।

বিশ্বে সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান। দেশটি নিয়মিত আত্মহত্যার তথ্য ও পরিসংখ্যান প্রকাশ করে থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালে জাপানে প্রতি লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ১৮ দশমিক ৫, যা পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আত্মহত্যার হারে শীর্ষে আছে দক্ষিণ কোরিয়া।

বিশ্ববাসীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব খুবই উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

জরুরি ভিত্তিতে এ সংকটকে আমলে না নিলে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

টোকিওর ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মিচিকো উয়েদা বলেন, ‘আমরা এমনকি লকডাউনেও ছিলাম না। এখানে অন্যান্য দেশের তুলনায় কোভিডের প্রভাব খুব কম ছিল। তবুও আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, অন্যান্য দেশেও একইরকমভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বাড়তে পারে।’

গত ১০ বছরের মধ্যে জাপানে আত্মহত্যার হার গত বছর কিছুটা কমলেও মহামারির কারণে ওই পরিসংখ্যান পাল্টে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, নারীদের আত্মহত্যার হার অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটিতে গত বছর মোট আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার, যা ১৯৭৮ সালে এই পরিসংখ্যান শুরুর পর থেকে সর্বনিম্ন।

জাপানে পুরুষের তুলনায় নারীদের আত্মহত্যার হার কম হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এটি বাড়তে দেখা যাচ্ছে। গত অক্টোবরে দেশটিতে নারীদের আত্মহত্যার হার ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৩ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেড়েছে ২২ শতাংশের মতো।

জাপানে আত্মহত্যার হার এত বেশি হওয়ার কারণ বেশ জটিল। সুদীর্ঘ কর্মঘণ্টা, স্কুলের চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কুসংস্কারকে এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।

এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারিতে সন্তানদের দেখাশোনা, সুস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদির কারণে কর্মজীবী মায়েদের ওপর অতিরিক্ত চাপ বেড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

BNP hosts discussion on first anniversary of July uprising

Leaders recall sacrifices, call for unity at Dhaka gathering

16m ago