শিশু হত্যায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশু হত্যা মামলায় তিন জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে আরও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় আরও একজনকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ জনের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
সাত বছর পর আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
নিহত শিশু হলো উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের নাজমুল ইসলাম মাসুমের ছেলে সোয়াইব হোসেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ফজল মুন্সী ওরফে ফজলুল হক মুন্সী, তার ভাই জসিম উদ্দিন রানা ওরফে ল্যাংড়া জসিম ও দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে রাজু। সাজাপ্রাপ্ত অপরজন হলেন একই গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে নাছির।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আব্দুর রহিম বলেন, ‘সোনারগাঁও উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের শিশু সোয়াইব হত্যা মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আজ আদালত ফজল মুন্সী, জসিম ও রাজু নামে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। একইসঙ্গে নাছির নামে আরেক আসামিকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়াও, অভিযুক্ত আরও পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।’
‘মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে এ রায় কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত’, বলেন তিনি।
মামলার বরাত দিয়ে নিহত সোয়াইবের বাবা নাজমুল ইসলাম মাসুম বলেন, ‘২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সোয়াইব তার বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এর ছয় দিন পর তাদের বাড়ির পাশে জঙ্গল থেকে সোয়াইবের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই ছেলেকে অপহরণের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোশারফ হোসেন, রাজু মিয়া, ফজল হক, জসিম উদ্দিন, শিরসতালী, নাছির উদ্দিন, আলী আহাম্মদ, রিনা বেগমসহ ১৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছিলাম। পরে পুলিশ মোশারফ হোসেন, রাজু মিয়া, নাছির উদ্দিন, ফজল মিয়া, সিরাসতালী ও আলী আহাম্মদসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।’
রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করে ছিলাম সব আসামির ফাঁসি হবে। কিন্তু, সেখানে তিন জনের ফাঁসি হয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী সাবেরা সুলতানা রোজি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
Comments