পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম দেখতে ৯ দেশে যেতে চায় সংসদীয় কমিটি

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি মিশন থেকে পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম পরিদর্শন করতে চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এই কার্যক্রম কীভাবে আরও গতিশীল ও কার্যকর করা যায় সে সম্পর্কে একটি বিস্তৃত ধারণা নেওয়াই এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য।

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি মিশন থেকে পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম পরিদর্শন করতে চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এই কার্যক্রম কীভাবে আরও গতিশীল ও কার্যকর করা যায় সে সম্পর্কে একটি বিস্তৃত ধারণা নেওয়াই এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ নয়টি দেশে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সফরের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করেছে মন্ত্রণালয়।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এই সফর হতে পারে।

তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সংসদীয় কমিটির বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সংসদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ জাতীয় বিদেশ সফরের আয়োজন করা হলে তাদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সংসদীয় কমিটির বিদেশ সফরের বিরুদ্ধে সরকার বেশ কয়েকবার মতামত জানিয়েছে।

আগস্টের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিদেশ সফরের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেয়।

বিভিন্ন দেশে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘের মিশনসমূহের কার্যক্রম কীভাবে আরও গতিশীল ও কার্যকর করা যায় সে সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা নেওয়ার জন্য এই সুপারিশ করে কমিটি।

নভেম্বরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত আরেকটি বৈঠকে মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটিকে এ বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করে।

কমিটিকে জানানো হয়, ১৫টি মিশনে পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কিত কার্যক্রম চলছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মচারীরা এসব মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ে কাজ করছেন বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে এসব মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শনের পরিকল্পনা করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের মতে, এই ১৫টি মিশন যে নয়টি দেশ রয়েছে সেগুলো হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ইতালি, কুয়েত, সিঙ্গাপুর এবং কাতার।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. শামসুল হক টুকু জানান, কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে কোনো সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমি বৈঠকে বলেছিলাম যে এই মুহূর্তে এ ধরনের পরিদর্শনের দরকার নেই।’

পাবনা-১ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য আরও জানান, কীভাবে আমাদের বিদেশি মিশনগুলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিচ্ছে তা সরাসরি দেখতে চেয়েছিলেন তারা।

তিনি বলেন, ‘আমরা টেলিফোনে এই তথ্য পেতে পারি, তবে কখনও কখনও সরাসরি অভিজ্ঞতা বেশি কাজে লাগে।’

জাতীয় সংসদের বিধি অনুসারে সংসদীয় কমিটিগুলোর কাজ হচ্ছে সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা, অনিয়ম ও গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করা এবং বিল বা সংসদ কর্তৃক প্রেরিত যেকোনো বিষয় পরীক্ষা করা।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ জাতীয় সফরকে নিরুৎসাহিত করে সরকার।

২০১৬ সালে স্পিকারের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সংসদীয় কমিটির বিদেশ সফরের কারণে সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে।’

২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ অনুসারে সংসদ বিষয়ক সচিবালয় সংসদ সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণের ব্যয় বহন করতে পারে।

সংসদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক নিজামুদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ যুক্তিসঙ্গত না।

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের টাকায় বিদেশ ভ্রমণের পর মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে পারার নৈতিক ভিত্তি সংসদীয় কমিটির নেই। যদি এই সফর যদি তদন্তের স্বার্থে বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হয়, তাহলে সেটা যৌক্তিক হয়।’

তিনি আরও জানান, প্রয়োজন হলে সংসদ সদস্যরা অবশ্যই বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে এর জন্য সংসদের বাজেটে আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam sons: They used fake pay orders even to legalise black money

Ashraful Alam and Asadul Alam Mahir, two sons of controversial businessman Mohammed Saiful Alam, deprived the state of Tk 75 crore in taxes by legalising Tk 500 crore in undisclosed income, documents obtained by The Daily Star have revealed.

2h ago