রবিউলের বোলিং-ইয়াসির ব্যাটিংয়ে জয়ে দিশা পেল মুশফিকরা
টপাটপ উইকেট তুলে নিয়ে ফরচুন বরিশালকে অল্প রানে বেঁধে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা রাখলেন রবিউল ইসলাম। এই অনিয়মিত অফ স্পিনারকে দারুণ সঙ্গ দিলেন শফিকুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় লম্বা সময় পর্যন্ত জড়সড় ব্যাটিং করল বেক্সিমকো ঢাকা। তবে শেষদিকে ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ঝড় তোলায় বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে প্রথম জয় তুলে নিল মুশফিকুর রহিমের দল।
বুধবার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে জিতেছে ঢাকা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে মোটে ১০৮ রান করে তামিমের বরিশাল। জবাবে ৭ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে মুশফিকরা।
মন্থর উইকেটে ঢাকার শুরুটাও হয় হতাশাজনক। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তারা তোলে ২২ রান, হারায় রবিউলের উইকেট। রান আউটে কাটা পড়েন তিনি। আরেক ওপেনার নাঈম শেখও ফেরেন একই কায়দায়। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ২০ বলে ১৩ রান করেন তিনি। ইনিংসের মাঝপথে ঢাকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪২ রান।
পজিশন বদলে চারে নামা তানজিদ হাসান তামিম খেলছিলেন স্বাছন্দ্যে। তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের ইতি ঘটে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ এক ডেলিভারিতে। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ২০ বলে ২২ রান করেন তিনি।
এরপর মুশফিক-ইয়াসিরের ব্যাটে ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি পায় ঢাকা। তাতেই টানা তিন হারের বৃত্ত ভেঙে জয়ের দিশা মেলে তাদের। ৯ রানে জীবন পাওয়া ইয়াসির ৩০ বলে করেন ৪৪ রান। তার ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ২ ছক্কা। ছয়গুলো তিনি মারেন ১৯তম ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে। বল সীমানা পার করে খেলা শেষ করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
তৃতীয় ওভারে উইকেটে যাওয়া মুশফিক শুরু থেকেই ছিলেন ধীরস্থির। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে কাঠখড় পোহাতে হচ্ছিল তাকে। ২৩ রান করতে তিনি খেলেন ৩৪ বল। তবে ইয়াসির জ্বলে ওঠায় তার শামুক গতির ব্যাটিং ঢাকার বিপদের কারণ হয়নি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে লেজেগোবরে হাল হয় বরিশালের। রবিউলের ঘূর্ণিতেই নাস্তানাবুদ হয় দলটি। ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচ করেন তিনি। তার বলে খাবি খেয়ে সাজঘরে ফেরেন বরিশালের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান।
দেখেশুনে শুরু করলেও ভালো কোনো জুটি গড়তে ব্যর্থ হয় তামিমের দল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় তারা। পাঁচে নামা তৌহিদ হৃদয়ের ৩৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে তিন অঙ্ক পার হয় দলটি। তিনিই বরিশালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ওপেনার তামিম করেন ৩১ বলে ৩১ রান। এছাড়া, দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল পজিশন বদলে লোয়ার অর্ডারে নামা মিরাজ।
ঢাকার হয়ে বাঁহাতি পেসার শফিকুল ৩ ওভারে ২ উইকেট নেন ১০ রানে। তিনি মেডেন নেন ২টি। ইনিংসের ১৬তম ও ১৯তম ওভারে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নজর কাড়েন আরেক অফ স্পিনার নাঈম। ৪ ওভারে মাত্র ৮ রানে ১ উইকেট শিকার করেন তিনি। বাকি উইকেটটি পান অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন।
জয়ের দেখা পাওয়া ঢাকা ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে পাঁচ দলের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থাকায় তাদের ঠিক উপরেই রয়েছে বরিশাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১০৮/৮ (তামিম ৩১, সাইফ ৯, ইমন ০, আফিফ ০, তৌহিদ ৩৩, ইরফান ৩, মিরাজ ১২, তাসকিন ৬*, তানভির ৩, কামরুল ১*; শফিকুল ২/১০, রুবেল ১/৩০, নাসুম ০/২৪, নাঈম ১/৮, রবিউল ৪/২০, মুক্তার ০/৯)
বেক্সিমকো ঢাকা: ১৮.৫ ওভারে ১০৯/৩ (নাঈম ১৩, রবিউল ২, মুশফিক ২৩*, তানজিদ ২২, ইয়াসির ৪৪*; তাসকিন ০/২৮, মিরাজ ১/১৩, তানভির ০/২৫, আবু জায়েদ ০/১৯, আফিফ ০/৪, কামরুল ০/২০)
ফল: ঢাকা ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: রবিউল ইসলাম।
Comments