বিসিবির কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট উইন্ডিজ প্রতিনিধি দল
আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের। তার আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজনে বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (সিডব্লিউআই) দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। সম্ভাব্য ভেন্যু ও সংলগ্ন হোটেল, হাসপাতাল ঘুরে এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আয়োজনে ভীষণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে তারা।
উইন্ডিজের পরিদর্শক দলের সদস্যরা হলেন আকশাই মানসিং ও পল স্লো। মানসিং ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিচালক। স্লো বোর্ডটির সেফটি ও সিকিউরিটি ম্যানেজার।
সম্ভাব্য দুই ভেন্যু চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ও মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে মানসিং বলেছেন, ‘সময় বদলাচ্ছে এবং সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে আগ্রহী। আমাদের বাংলাদেশে আসার কারণ হলো, এটি আগামী বছরের শুরুতে সম্ভব হবে কি না তা খতিয়ে দেখা।’
‘আমাকে বলতেই হবে যে, বিসিবি আমাদেরকে প্রোটোকলসমূহের যে বর্ণনা দিয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত গভীর চিন্তার পরিচয় দেয়। যেহেতু আমাদের আসার আগে তিনটি টুর্নামেন্ট হয়েছে এবং এখন একটি হচ্ছে, সুতরাং, তারা অভ্যস্ত। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে আমরা যা দেখেছি, তা নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। এখানে সুযোগ-সুবিধা দারুণ, কোভিড প্রোটোকল অত্যন্ত স্পষ্ট ও নিখুঁত। যে হাসপাতাল ও হোটেলগুলোয় আমরা গিয়েছি, সেগুলোর আচরণ ও কাজ কোভিড-১৯ এর জন্য সুপারিশ করা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বিচার করলে, আমরা খুবই খুশি। এখন আমাদেরকে এই পর্যবেক্ষণগুলো ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোর্ড পরিচালকদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা যা দেখেছি, তা বিশ্বের যেকোনো জায়গার আয়োজনের চেয়ে কম নয়।’
সফরের শুরুতে কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে তিনি যোগ করেছেন, ‘সেই (কোয়ারেন্টিন) কারণেই (সিরিজের) দিন-তারিখ এখনও নির্দিষ্ট নয়। কারণ, কোভিড প্রোটোকল অনুযায়ী, কমপক্ষে সাত দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। কারণ, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমরা যেন বাংলাদেশকে আক্রান্ত না করি। সুতরাং, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমরা যেন কোয়ারেন্টিনে থাকি। স্রেফ দিনের ব্যাপার নয়, পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসতে হবে। বাংলাদেশে আসার আগে একবার নেগেটিভ ফল আসতে হবে। বাংলাদেশে আসার পর তিনবার নেগেটিভ হতে হবে। এসব কিছুর জন্য সাধারণত সাত দিন সময় প্রয়োজন হয়। তাই চূড়ান্ত দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে হবে এখন।’
‘প্রথম তিন দিনের জন্য আমরা একেবারে রুমের ভেতরে কোয়ারেন্টিনের পরামর্শ দিচ্ছি। প্রথম পরীক্ষা হবে পৌঁছানোর পর। তিন দিন পর আমরা আরেকবার পরীক্ষা করব। সেখানে নেগেটিভ ফল আসলে, আমরা আমাদের স্কোয়াডের ভেতরে নিজেরা নিজেরা অনুশীলন করতে চাই। কিন্তু সাত দিন পার হওয়ার আগে বাইরের কারও সংস্পর্শে আমরা আসতে চাই না। আমরা ততদিন স্কোয়াডের ভেতরে অনুশীলন করব ও অন্যান্য কাজকর্ম করব। সাত দিন পর বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়ে নেট সেশন করার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।’
বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে স্লো বলেছেন, ‘আমার প্রাথমিক কাজ ছিল, আগামী জানুয়ারিতে প্রস্তাবিত সিরিজটির নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা। এটি বলতে পেরে আমি খুশি যে, আমি যা দেখেছি, সেখানে আমাদের কাছে উপস্থাপন করা নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও প্রোটোকলগুলো খুবই সন্তোষজনক। আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, সেই পরিকল্পনাগুলো যেভাবে লেখা হয়েছে এবং আলোচনা করা হয়েছে, সেভাবে যদি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে কোনো ধরনের অপ্রিয় ঘটনা ঘটবে না। আমি পুরো আয়োজন নিয়ে অত্যন্ত খুশি। এয়ারপোর্ট, হোটেল, প্র্যাকটিস ভেন্যু থেকে ম্যাচের ভেন্যু- সবকিছু নিয়ে।’
উল্লেখ্য, আগামী জানুয়ারিতে তিন টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুই টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই সিরিজের সূচি ও ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উইন্ডিজের প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ওপর।
Comments