পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নিতে ইরানের পার্লামেন্টে বিল পাস
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/iran_6.jpg?itok=971FqSuB×tamp=1606970641)
ইরানে পরমাণু কর্মসূচির ওপর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে সেগুলোকে এগিয়ে যেতে দেশটির রক্ষণশীল ও কট্টরপন্থিদের প্রস্তাবিত একটি বিল পাস হয়েছে পার্লামেন্টে।
গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে ইরানের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা কমিয়ে আনতে একটি বিল সংসদে পাস হয়েছে।
দেশটির সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও শক্তিশালী ১২ সদস্যের গার্ডিয়ান কাউন্সিল বিলটিকে অনুমোদন দিয়েছে।
পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিলটিতে ইরান সরকারকে পরমাণু বোমা তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানো, নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত অস্ত্র পরিদর্শন স্থগিত রাখা ও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির বিভিন্ন শর্ত উপেক্ষা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিলটিতে আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি সংস্থার (আইএইএ) ইরানের পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন বন্ধ ও দেশটির ফোর্ডো পরমাণু স্থাপনায় উৎপাদন ও সংরক্ষণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
ইরানি পার্লামেন্টের সংবাদে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের পরমাণু ওয়াচডগ প্রতিবছর দেশটির পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন করে থাকে। ইরানের আইন প্রণেতারা চান, তাদের শর্ত পূরণ না করা হলে এই পরিদর্শন পুরোপুরি বন্ধ করা হোক।
বিলটিতে বলা হয়েছে, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া ও ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসা যুক্তরাষ্ট্রকেও অবশ্যই ইরানের সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যাংকিং সম্পর্ক রাখতে হবে।
ইরানের তেল ও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে হবে এবং অবিলম্বে পণ্য বিক্রি থেকে তাদের আয় ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে।
এমপিরা জানিয়েছেন, আইন কার্যকর হওয়ার সময় থেকে যদি দুই মাসের মধ্যে এটি না করা হয় তবে আইএইএ’র পরিদর্শন ক্ষমতা বাতিল করতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
এদিকে, বিলটি পাস হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের পরমাণু সমঝোতা চুক্তি পুনরুদ্ধার করার ক্ষেত্রে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য এই বিলটি ‘ক্ষতিকারক’ হবে।
এর আগে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি এখনও পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রুহানির মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতে, ইরানের পরমাণু-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেশটির সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের। তবে, পার্লামেন্টের সদস্যরা শীর্ষ পরমাণু ও সামরিক বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহকে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, ইরানের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত জবাব দেওয়া হয়নি। তাই তারা বিলটি নিয়ে কোনো আপত্তি তোলেননি।
আইনে পরিণত হতে বিলটিকে এখনও অনুমোদনের দুটি ধাপ পার হতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের পার্লামেন্ট প্রায়ই পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান দাবি করে আসছে।
Comments