তিস্তার বুকে শ্যালো বসিয়ে চাষাবাদ

Lalmonirhat_Tista_3Dec20.jpg
তিস্তার বুকে হঠাৎ জেগে ওঠা চরে এখন স্থানীয় কৃষকরা আলু, শাক, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, পেঁয়াজ ও মরিচ চাষে ব্যস্ত। ছবি: স্টার

এক মাস আগেও তিস্তায় ছিল থৈ থৈ পানি। হঠাৎ জেগে ওঠা চরে এখন স্থানীয় কৃষকরা আলু, শাক, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, পেঁয়াজ ও মরিচ চাষে ব্যস্ত। পানির প্রয়োজনে চরেই বসানো হয়েছে শ্যালো মেশিন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা এলাকার কৃষক রোস্তম আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিস্তায় যতদূর চোখ যায় শুধু বালুচর। সেখানে আলু ও মরিচ চাষ করছি। এখানকার কয়েকজন কৃষক মিলে আমরা একটি শ্যালো মেশিন থেকে সেচের পানি সংগ্রহ করি।’

এবার প্রায় ছয় বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছেন একই চরের কৃষক আজিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘তিস্তার বুকে ৩৩ থেকে ৩৫ ফুট গভীর পাইপ বসালে পানি পাওয়া যায়।’

উপজেলার চর জুম্মাপাড়ার কৃষক মোকসেদুল ইসলাম বলেন, ‘আলু ও মিষ্টি কুমড়া চাষে প্রচুর পরিমাণে সেচের পানি প্রয়োজন হয়। তিস্তায় পানি নেই। অনেক দূরে একটি চ্যানেলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও সেখান থেকে সংগ্রহ করা কষ্টকর। ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনের সাহায্যে সেচের পানি সরবরাহ করায় চরাঞ্চলে ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে।’

হাতিবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত আট থেকে ১০ বছর যাবৎ আমরা বালুচরে এভাবে চাষাবাদ করছি।’

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিস্তা ও ধরলা নদীর বিশাল চরাঞ্চলে প্রায় ২০ হাজার কৃষক ফসল উৎপাদন করছেন। তিস্তায় পানি না থাকায় উৎপাদন খরচ বেশি হয়। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাদের কারিগরী সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘উজান থেকে পানি না আসায় তিস্তায় পানি প্রবাহ অনেক কমেছে। বন্ধ রাথা হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেট। তাই তিস্তা ব্যারেজের ভাটিতে পানি প্রবাহ আরও কম। পলি জমি তিস্তার বুক ভরাট হয়ে মূল ভূ-খণ্ডের সমান হয়ে গেছে। তাই বর্ষাকালে অল্প পানিতে তিস্তা পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তিস্তায় যেটুকু পানি আছে তাও পাঁচ থেকে আটটি চ্যানেলে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। তিস্তা নদী খনন করে একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে রূপান্তর করতে পারলে তিস্তায় পানি প্রবাহ সচল থাকবে। এতে লাভবান হবেন চরের কৃষকরা।’

Comments