প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন, ৩ যুগেও মালদহ নদীতে সেতু পাননি ৮ গ্রামের মানুষ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর-মহিষতুলি সড়কে মহিষতুলি এলাকায় মালদহ নদীতে একটি সেতুর অভাবে আটটি গ্রামের চার হাজারের বেশি মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর-মহিষতুলি সড়কে মহিষতুলি এলাকায় মালদহ নদীতে সেতু না থাকায় নৌকায় পারাপার করেন আট গ্রামের মানুষ। ১ ডিসেম্বর ২০২০। ছবি: এস দিলীপ রায়

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর-মহিষতুলি সড়কে মহিষতুলি এলাকায় মালদহ নদীতে একটি সেতুর অভাবে আটটি গ্রামের চার হাজারের বেশি মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন।

গত তিন যুগ ধরে সরকারের কাছে এখানকার গ্রামবাসী সেতুর দাবি করে আসছেন। সে সময় থেকে তারা প্রতিশ্রুতিও পেয়ে আসছেন জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে।

গত কয়েক বছর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থলে এসে মাপযোগ ও মাটি পরীক্ষার কাজ করলেও বাস্তবে কোনো ফল যাচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই রুট দিয়ে আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী ও গোবধা গ্রামের মানুষজন নিয়মিত চলাচল করেন।

মহিষতুলি গ্রামের কৃষক নজের আলী (৬৫) অভিযোগ করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মালদহ নদীতে সেতু না থাকায় আমাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে, জমির ফসল বাড়িতে আনতে অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হয়।’

‘মালদহ নদীতে সেতু হবে— এমন প্রতিশ্রতি পাচ্ছি প্রায় তিন যুগ। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলার চেয়ারম্যান এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু, আজো এর বাস্তবায়ন দেখছি না,’ যোগ করেন তিনি।

উত্তর গোবধা গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘সেতুর অভাবে আমরা এই রুটে ঠিক মতো চলাচল করতে পারছি না। অনেক সময় প্রয়োজন থাকলেও নৌকা ভাড়া দেওয়ার ভয়ে গন্তব্যে যাওয়া হয় না।’

‘মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি করতে করতে আমরা ক্লান্ত’ মন্তব্য দেলোয়ারের।

ফলিমারী গ্রামের লিটন চন্দ্র রায় (৩৫) ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মালদহ নদীতে সেতু হলে গ্রামবাসীর যাতায়াত সহজতর হবে। তারা খুব সহজে উৎপাদিত ফসল ঘরে আনতে পারবেন এবং বিক্রি করতে পারবেন।’

‘আমরা আর প্রতিশ্রুতি চাই না। মালদহ নদীতে সেতু চাই। এটাই আমাদের দাবি,’ বললেন লিটন।

মালদহ নদীর খেয়াঘাটের মাঝি খলিল মিয়া (৫৮) ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, এই খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিবার পাড়ি দিলে জনপ্রতি নৌকা ভাড়া দিতে হয় ১০ টাকা। প্রতি মোটরসাইকেলর জন্য ১০ টাকা আর বাইসাইকেলের জন্য দিতে হয় পাঁচ টাকা।

‘মালদহ নদীতে সেতু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে আর স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে’ বলে মনে করেন তিনি।

ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মালদহ নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডিতে প্রস্তাবনা রয়েছে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আদিমারী উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী সোহেল রানা ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের ডিপিপি সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।’

বরাদ্দ পেলে চলতি অর্থ বছরে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Revenue target for FY25 to be left unchanged

The interim government will not bring down the revenue collection target for the current fiscal year as it aims to mobilise more domestic resources to reduce reliance on foreign loans, according to Finance and Commerce Adviser Salehuddin Ahmed.

1h ago