ঢাকার জয়ে আলীদের দাপট
নাঈম হাসানকে ওপেনিংয়ে নামানোর ফটকা কাজে লাগেনি। সম্ভাবনা দেখিয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ঝড় তোলেন ইয়াসির আলী ও আকবর আলী। আর দুই আলীর ব্যাটেই বড় সংগ্রহ পায় বেক্সিমকো ঢাকা। পরে আরেক (মুক্তার) আলীর বিধ্বংসী বোলিংয়ে জয়ও নিশ্চিত করে তারা। টানা তিন ম্যাচ হারের পর টানা দ্বিতীয় জয় পেল দলটি।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মিনিস্টার রাজশাহীকে ২৫ রানে হারিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান করে তারা। জবাবে ৫ বল বাকি থাকতে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় রাজশাহী।
লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরুটাই ভালো হয়নি রাজশাহীর। দলীয় ১১ রানেই দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিসুল ইসলাম ইমনকে হারায় দলটি। এরপর অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুলও ব্যর্থতার বৃত্ত আরও লম্বা করেছেন। ৮ বলে ১ রান করে শফিকুল ইসলামের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন। ফলে ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে দলটি।
তবে চতুর্থ উইকেটে রনি তালুকদারের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। এ জুটি ভাঙেন মুক্তার আলী। রীতিমতো রাজশাহী শিবিরে তোপ দাগান তিনি। পরে মেহেদী হাসানকেও তুলে নেন তিনি। টিকতে দেননি দারুণ ছন্দে থাকা ফজলেকেও। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি রাজশাহী। ১২৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ফজলে। ৪০ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৪ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪০ রান আসে রনির ব্যাট থেকে। ঢাকার পক্ষে ৩৭ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন মুক্তার। ৩১ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন আরেক পেসার শফিকুলও।
এর আগে শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ঢাকা। শুরুতেই ব্যাটিং অর্ডারে চমক দেখায় দলটি। মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামেন নাঈম হাসান। মূলত বোলার হিসেবে পরিচিত এ খেলোয়াড় ব্যাট চালাতে জানলেও খুব একটা পারদর্শী নন। এর আগে ভালো কোনো ক্যামিও ইনিংস খেলার উদাহরণও নেই। তারপরও তার ওপেনিংয়ে নামা প্রশ্ন তুলেছে অনেক।
স্বাভাবিকভাবেই কোনো অঘটনের জন্ম দিতে পারেননি নাঈম। তবে দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার নাঈম শেখকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু এরপর হঠাৎ ছন্দপতন হয় দলটির। এ জুটি ভাঙতে দ্রুত আরও একটি উইকেট হারায় তারা। এরপর বেশিক্ষণ আগাতে পারেননি মুশফিকও। সম্ভাবনা জাগিয়ে আরও একবার উইকেট বিলিয়ে এসেছেন তিনি। ২৯ বলে ৩৭ রান করার পর মুকিদুল ইসলামের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন অধিনায়ক।
তবে ঢাকাকে লড়াইয়ের সংগ্রহ এনে দেন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ইয়াসির ও আকবর। অসাধারণ ব্যাটিং করে দলের ইনিংস মেরামত করেছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। দুইজনই ব্যাট করেছেন আগ্রাসী ঢঙে। তবে শুরুতে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন ইয়াসির। তুলে নিয়েছেন নিজের হাফসেঞ্চুরিও। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে আকবরের সঙ্গে গড়েন ৯৬ রানের জুটি।
৩৯ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন ইয়াসির। নিজের ইনিংসটি সাজাতে ৯টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। শেষ দিকে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেন আকবরও। হাফসেঞ্চুরি পেতে পেতেও পাননি। শেষ পর্যন্ত ২৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আকবর। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ তরুণ।
মিনিস্টার রাজশাহীর পক্ষে ৩৮ রানের খরচায় ২টি উইকেট নিয়েছেন মুগ্ধ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৭৫/৫ (নাঈম হাসান ১, নাঈম শেখ ৯, মুশফিক ৩৭, তানজিদ ২, ইয়াসির ৬৭, আকবর ৪৫*, মুক্তার ৩*; মেহেদী ১/২৩, ইবাদত ০/৩৪, সানি ১/২৬, রেজা ০/৩৯, মুকিদুল ২/৩৮, ইমন ০/১৫)।
মিনিস্টার রাজশাহী: ১৯.১ ওভারে ১৫০ (শান্ত ৫, ইমন ৬, রনি ৪০, আশরাফুল ১, ফজলে ৫৮, মেহেদী ১, সোহান ১১, রেজা ১৪, সানি ৭*, মুগ্ধ ৪, ইবাদত ১; রুবেল ২/১৫, রবি ১/১৭, নাসুম ০/৩৫, শফিকুল ৩/৩১, নাঈম ০/১৪, মুক্তার ৪/৩৭)।
ফলাফল: বেক্সিমকো ঢাকা ২৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির আলী (বেক্সিমকো ঢাকা)।
Comments