ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে চুক্তি ভেঙে অত্যাধুনিক মেশিন বসানোর পরিকল্পনা ইরানের

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়াতে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ভেঙে মাটির নিচের প্ল্যান্টে কয়েক শ অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ বসানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান।
ছবি: রয়টার্স

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়াতে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ভেঙে মাটির নিচের প্ল্যান্টে কয়েক শ অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ বসানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান।

শুক্রবার জাতিসংঘের ওয়াচডগ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) তাদের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা আইএইএ’র ওই গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনার ভূগর্ভস্থ প্রকল্পে আরও তিন গুচ্ছ আধুনিক আইআর-২এম সেন্ট্রিফিউজ বসানোর পরিকল্পনা করছে ইরান। বোমা হামলা থেকে সুরক্ষায় ইরান মাটির নিচে এই প্রকল্প গড়ে তুলেছিল।

২০১৫ সালে শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সই করা পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ভূগর্ভস্থ ওই প্রকল্পে কেবল আইআর-১ সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করতে পারবে; যেগুলোর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা কম। চুক্তি অনুযায়ী কেবল ওই মেশিনগুলোর সাহায্যেই ইরান ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করতে পারবে।

কিন্তু, সম্প্রতি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে চুক্তি ভেঙে ইরান নাতাঞ্জের ভূগর্ভস্থ প্রকল্পে এক গুচ্ছ ১৭৪ আইআর-২এম সেন্ট্রিফিউজ বসিয়েছে। এ ছাড়াও, অন্যান্য আধুনিক মডেলের দুই গুচ্ছ সেন্ট্রিফিউজ সেখানে বসানোর পরিকল্পনা করছে।

নাতাঞ্জে আগে থেকে বসানো ৫০৬০ আইআর-১ সেন্ট্রিফিউজ; যেগুলো বছরের পর বছর ধরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে আসছে, সেগুলোর সঙ্গেই নতুন মডেলের সেন্ট্রিফিউজ বসাতে চায় তেহরান। এ প্রসঙ্গে আইএইএ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে একটি চিঠি দিয়েছে দেশটি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ইরান আইএইএকে জানিয়েছে যে, নাতাঞ্জের ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট অপারেটর (এফইপি) সেখানে তিন গুচ্ছ আইআর-২এম সেন্ট্রিফিউজ মেশিন বসানোর কাজ শুরু করতে চায়।’

রয়টার্স জানায়, ২০১৫ সালের ‘ইরান পরমাণু চুক্তি’ থেকে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার পর তেহরান পরমাণু চুক্তির অনেক শর্তই ভঙ্গ করে আসছে। 

গত সপ্তাহে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ডের পর ইরানে পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে কর্মসূচিগুলোকে এগিয়ে যেতে দেশটির রক্ষণশীল ও কট্টরপন্থিদের প্রস্তাবিত একটি বিল পার্লামেন্টে পাস হয়।

বিলটিতে ইরান সরকারকে পরমাণু বোমা তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানো, নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত স্থাপনা পরিদর্শন স্থগিত রাখা এবং বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির বিভিন্ন শর্ত উপেক্ষা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর চাপ বাড়বে। ইতোমধ্যেই দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে ফেরার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বাইডেন। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।

আরও পড়ুন:

‘দায়ী ইসরায়েল’ পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার কঠিন প্রতিশোধ নেবে ইরান

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ পরমাণু চুক্তি মেনে চললে ইরানও মানতে প্রস্তুত: জারিফ

পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নিতে ইরানের পার্লামেন্টে বিল পাস

পরমাণু বিজ্ঞানীকে ইসরায়েল হত্যা করেছে: ইরান

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ী হামলায় নিহত

পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যা, ইরান যা করতে পারে

ইরান পরমাণু বোমা বানানোর কত কাছে?

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago