বায়ুদূষণে ত্বকের রোগ ও প্রতিকার
মানুষের কর্মকাণ্ডে ইতিমধ্যেই বায়ুমণ্ডল দুষিত হয়ে পড়েছে। নানা প্রকার গ্যাস ও ধুলি কণার সমন্বয়ে বায়ু দূষিত হয়। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় দূষণের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের আশঙ্কায় আছে এই উপমহাদেশ। আর আমাদের রাজধানী ঢাকা তো প্রায়ই বায়ুদূষণের তালিকায় বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে থাকে।
বায়ুদূষণের কারণে মানবদেহে নানাধরনের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় বা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ত্বক হলো মানুষের শরীরের একক বৃহত্তম অঙ্গ। ত্বকের অন্যতম কাজ হলো পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু, বায়ুদূষণের কারণে ত্বক নানা রোগ আক্রান্ত হতে পারে।
দূষণের কারণে সৃষ্ট ধোয়াশে আবহাওয়ার কারণে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। অক্সিজেনের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ফলে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ত্বকের প্রদাহের কারণে একজিমা, ডার্মাটাইটিস, এলার্জি, ব্রণ ইত্যাদি রোগের তীব্রতাও বেড়ে যায়।
- বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন কমে যাওয়ার প্রভাবে ত্বকের কোলাজেন ভেঙে যায়। ফলে, ত্বকের স্বাভাবিক মসৃণতা নষ্ট হয়ে ভাজ, দাগ ইত্যাদি বয়স বৃদ্ধির লক্ষণের আবির্ভাব হয়।
- বায়ুদূষণে সৃষ্ট ত্বকের শুষ্কতার কারণে চুলকানি বেড়ে যায়।
- বায়ুদূষণে কার্বন কণা বৃদ্ধি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
- বায়ুদূষণের কারণে মাথার চুল ঝরে পড়া বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রতিরোধে করণীয়
দৈনন্দিন জীবনে কিছু অভ্যাস রপ্ত করে বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধের চেষ্টা করা যেতে পারে। এগুলো হলো-
- বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন ও ফেসমাস্ক ব্যবহার করুন।
- নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। ত্বকের ধরণ অনুযায়ী সঠিক ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
- বাইরে থেকে এসেই গোসল করার চেষ্টা করুন। অন্তত মুখমণ্ডল এবং হাত পা ক্লিন্জার বা কম ক্ষারীয় সাবান দিয়ে পরিষ্কার করার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- ঘরের ভেতরে বায়ূ পরিশোধক যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।
- দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন। পর্যাপ্ত পানীয় পান করুন।
এসব নিয়ম মেনে চলার পরেও ত্বকে কোন সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ
Comments