যেভাবে গ্রেপ্তার হলো ২ ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় মোট চার জন জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরা শহরের জুগিয়া এলাকার কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইবনে মাসউদ মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক। ছাত্র দুজন সরাসরি ভাস্কর্য ভাঙার কাজে অংশ নেয়।
Kushtia.png
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ইবনে মাসউদ মাদ্রাসার ছাত্র আবু বকর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ এবং শিক্ষক আলামিন হোসেন ও ইউসুফ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি: স্টার

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় মোট চার জন জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরা শহরের জুগিয়া এলাকার কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইবনে মাসউদ মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক। ছাত্র দুজন সরাসরি ভাস্কর্য ভাঙার কাজে অংশ নেয়।

কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনসে লিখিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত এসব তথ্য জানান।

এসপি জানান, ছাত্র আবু বকর মিঠুন (১৪) ও সবুজ ইসলাম নাহিদ (১৪) সরাসরি ভাস্কর্য ভাঙার কাজটি করে। সেসময় শিক্ষক আলামিন হোসেন (৩৩) ও ইউসুফ আলী (৩৭) পাহারায় ছিলেন।

গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ডান হাত, পুরো মুখ ও বাম হাতের অংশবিশেষ ভেঙে ফেলা হয়।

এসপি জানান, পাঁচ রাস্তার মোড় এলাকায় একটি ব্যাংক, অপর একটি ব্যাংকের ফার্স্ট ট্র্যাক বুথসহ রাস্তায় পুলিশের নিজস্ব সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা আছে। ওইসব ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ভাঙচুরকারী দুজনকে শনাক্ত করে পুলিশ।

পুলিশের সংগ্রহ করা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘড়িতে তখন রাত ২টা বেজে ১৬ মিনিট। পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিত দুজনের মধ্যে একজনের পিঠে ব্যাগ ঝোলানো। শহরের যে সড়কটি মজমপুর গেট হয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে এসে মিশেছে, সেদিক দিয়ে পায়ে হেঁটে ওই দুজন বাঁশ বেয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে উঠে হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভাস্কর্যটি এলোপাথাড়ি ভাঙচুর করে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে ভাস্কর্যটি ভেঙে তারা নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। সব গোয়েন্দা সোর্স কাজে লাগিয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সন্ধান পেয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, একটি মোবাইল ফোনকলের সূত্র ধরে তারা প্রথমে জেঅর মিরপুর উপজেলার মশান বাজার এলাকার আব্দুর রহমান ও আব্দুল্লাহ নামের দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে। এরাও ওই মাদ্রাসার ছাত্র। এই দুই ভাইয়ের কাছ থেকেই পুলিশ ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের সন্ধান পায়। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ওই মাদ্রাসায় অভিযান চালায়। কিন্তু মাদ্রাসাতে ভাঙচুরকারী দুজনকে পাওয়া না গেলে পুলিশ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই দুই শিক্ষকের সন্ধান পায়। শিক্ষকরা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানান যে, ওই দুই ছাত্র ভাস্কর্য ভেঙে মাদ্রাসায় ফিরে এসে ঘটনা জানালে তারা তাদের শনিবার সকালে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

এরপর পুলিশ জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গোলাবাড়িয়া থেকে নাহিদকে ও মিরপুর উপজেলার শিংপুর থেকে বকরকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে এই দুজন জানায়, তারা মামুনুল হক ও ফয়জুল হকের ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে এ কাজ করেছে। এ ছাড়া, এই পরিকল্পনা তারা নিজেরাই সাজিয়েছে।

ভাঙচুরকারী দুজন আরও জানায়, ওই দিন রাতে তারা মাদ্রাসা থেকে চুপি চুপি বেরিয়ে এসে ভাস্কর্য ভেঙে আবার মাদ্রাসায় ফিরে যায়।

পুলিশ এ ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আজই আদালতে নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

7m ago