‘ধর্মান্ধ শক্তি পবিত্র কোরানের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফতোয়া দিচ্ছে’
কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙায় জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছেন ১৫ জন শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিল্পী। তারা বলেছেন, এই ঘটনায় জড়িতরা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সংবিধানের বিরোধী।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরি, শামসুজ্জামান খান, হাসান আজিজুল হক, অনুপম সেন, সারোয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, আবদুস সেলিম, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, শফি আহমেদ, আবুল মোমেন, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সারা যাকের ও শিমূল ইউসুফ।
তারা বলেন, এই ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি দেশের নান্দনিক ভাস্কর্য ধ্বংস করার জন্য ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরানের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফতোয়া দিচ্ছে। জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার যে চূড়ান্ত ধৃষ্টতা দেখিয়েছে তা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য মহা অপরাধ। আমরা এ ঘটনায় স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ এবং এই জঘন্য কাজে জড়িত অপরাধীদের চূড়ান্ত শাস্তি দেখতে চাই।
‘ভাস্কর্য মানব সভ্যতার আদিতম শিল্প মাধ্যমের একটি। প্রাগৈতিহাসিক যুগে গুহামানবও গুহার দেয়ালে চিত্রাঙ্কন করে ও মুরাল তৈরি করে মানুষের সৌন্দর্যবোধ ও নান্দনিকতার যে স্ফুরণ ঘটান, তারই পথ ধরে মানব সভ্যতা বিজ্ঞান, শিল্প, মানব-সম্পর্ক শৈলীর উত্তরোত্তর বিকাশ ঘটিয়ে সভ্যতার সোপান তৈরি করেছে। সেই সোপান মানুষকে পৌঁছে দিয়েছে পৃথিবীর সীমানা অতিক্রম করে মহাবিশ্বের ছড়িয়ে পড়ে সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনে। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক এই মহাযাত্রার পথ আমরা রুদ্ধ হতে দিতে পারি না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভাস্কর্য কালের ও মানব সভ্যতার শিল্পমণ্ডিত সাক্ষ্য। মানব ইতিহাস এই ভাস্কর্যের মধ্যদিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বিধৃত করে মানুষের পরম্পরা তৈরি করে। ...বিজ্ঞান ও শিল্পের এ অনিবার্য ভূমিকাকে প্রত্যাখ্যান করে এ মৌলবাদী অপশক্তি বাংলাদেশকে একটি পশ্চাৎপদ জনপদে পরিণত করতে চায়। আমরা তাদের এ হীন প্রচেষ্টা যেকোনো মূল্যে রুখে দেবো।
Comments