বিশ্বের ১৪ শতাংশ ধনীর জন্য ৫৩ শতাংশ ভ্যাকসিন মজুত

বঞ্চিত হবে উন্নয়নশীল বিশ্বের জনগণ
vaccine.jpg
ছবি: রয়টার্স

ধনী দেশগুলো করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ মজুত করছে, এর ফলে দরিদ্র দেশের জনগণ বঞ্চিত হতে পারে বলে সর্তক করেছে দ্য পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স।

ধনী দেশগুলো বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করলেও তারা এখন পর্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত ভ্যাকসিনগুলোর ৫৩ শতাংশ কিনে ফেলেছে।

বিশ্বজুড়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৭০টি নিম্ন আয়ের দেশে ১০ জনের মধ্যে কেবল একজন ভ্যাকসিন দিতে পারবেন। অক্সফোর্ড ও অ্যাট্রাজেনেকা তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ৬৪ শতাংশই উন্নয়নশীল বিশ্বে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও ভ্যাকসিনের এই অপ্রতুলতা থাকবে।

মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনী দেশগুলো সম্ভাব্য প্রতিটি ভ্যাকসিনই বাজারে আসার আগেই কিনে রাখছে। ফলে, সবগুলো ভ্যাকসিন অনুমোদন পেলে ধনী দেশগুলোর হাতে তাদের জনগণকে তিনবার ভ্যাকসিন দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ডোজ থাকবে।

উদাহরণ হিসেবে কানাডার কথা বলা যায়। দেশটি এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থ ঢেলেছে তাতে তাদের প্রত্যেক নাগরিককে পাঁচবার কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে।

অক্সফামের হেলথ পলিসি ম্যানেজার আন্না মেরিয়ট বলেন, ‘অর্থ-বিত্ত কারো জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে না। তবে নাটকীয় কিছু না ঘটলে বিশ্বজুড়ে কয়েক বিলিয়ন মানুষ আগামী কয়েক বছরেও কোভিড-১৯ এর নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন পাবে না।’

নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিনের ৩০০ মিলিয়ন ডোজ গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই) এর কর্মসূচি ‘কোভ্যাক্স’ এর মাধ্যমে ৯২টি উন্নয়নশীল দেশে ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিতের জন্য সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তাদের ভ্যাকসিন অন্যদের তুলনায় সস্তা এবং এটি সাধারণ রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যাবে যাতে বিশ্বজুড়ে এটি সহজেই বিতরণ করা যাবে।

তবে ভ্যাকসিন জোটগুলো বলছে, কেবল একটি সংস্থা পুরো বিশ্বের জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে না।

‘কোভ্যাক্স’ পরিকল্পনা কার্যকর হলেও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অক্সফাম এবং গ্লোবাল জাস্টিস নাও এর মতো সংস্থাগুলো বলছে, কেবল এতোটুকু যথেষ্ট না। আরও বেশি ডোজ উৎপাদন নিশ্চিত করতে ওষুধ সংস্থাগুলোর উচিত একে অপরকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া।

পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে এমন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে আরও কয়েক বিলিয়ন ডোজ তৈরি করা যায় এবং যাদের প্রয়োজন তাদের সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি কোভিড-১৯ প্রযুক্তি অ্যাক্সেস পুলের মাধ্যমে এটি করতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স।

অন্যদিকে, ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনটি ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে। এই সপ্তাহে ভ্যাকসিন প্রয়োগও শুরু করেছে। ফাইজারের ভ্যাকসিন খুব শিগগির যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেও অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর অর্থ হলো, এটি দরিদ্র দেশে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।

মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকাও কয়েকটি দেশে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

এছাড়াও রুশ ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ফাইভ করোনা প্রতিরোধে ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। রাশিয়া আরও চারটি ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করছে।

Comments

The Daily Star  | English
rise of foreign investment in Bangladesh

Bangladesh draws growing attention of foreign investors

Says Uber official in an interview with The Daily Star

12h ago