শেষ স্প্যান প্রস্তুত, বসানো হতে পারে আগামীকাল
পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান বসানো হতে পারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন প্রকৌশলীরা। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে ৬ হাজার ১৫০ মিটারের পুরো সেতু। সংযোগ হবে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত। ৩৯তম স্প্যান বসানোর ছয়দিনের মাথায় এ স্প্যানটি বসানো হচ্ছে।
ইতোমধ্যে স্প্যানটিকে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে রাখা হয়েছে। বাকি আছে শুধু পিলারের উচ্চতায় স্প্যানটিকে বসিয়ে দেওয়ার কাজ। যা কাল সকাল ৯টায় শুরু হবে এবং দুপুরের মধ্যেই দুই পিলারে স্থাপন করার কথা আছে।
পদ্মাসেতুর স্প্যান বসানোর কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম পাটোয়ারী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটিকে নির্ধারিত পিলারের কাছে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আগামীকাল সকালে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর স্থাপনের ধাপগুলো ঠিকমতো সম্পন্ন করা হবে। তবে, এজন্য অনুকূল আবহাওয়া দরকার।’
প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম পাটোয়ারী আরও বলেন, ‘আজ বিকেল ৫টা ৫ মিনিটের দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কনসট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটিকে বহন করে রওনা হয় ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন। এরপর নির্ধারিত দুই পিলারের কাছে এসে পৌঁছায় সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটের দিকে। স্প্যানটিকে সকালেই নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও কুয়াশা ও আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি।’
আজ সারারাত মূল নদীতে দুই পিলারের কাছেই অবস্থান করবে স্প্যানবহনকারী ভাসমান ক্রেনটি। অন্য কোনো নৌযান যাতে বাধা তৈরি না করে এজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নজর রাখছেন।
শেষ স্প্যান বসানো দেখতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। তবে, করোনা পরিস্থিতির কারণে আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও শ্রমিক, প্রকৌশলীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। এরপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পরে নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধাপে ধাপে স্প্যান বসতে থাকে। চলতি বছর করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে চার মাস স্প্যান বসানো হয়নি। কিন্তু, গত দুই মাসে ৮টি স্প্যান বসানো হয় এবং এ মাসে বসে একটি স্প্যান। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব। এ ছাড়া, ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বসানো স্প্যানগুলোতে এসব স্ল্যাব বসানো হচ্ছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণে কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেক প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
Comments