পায়ে হেঁটে পদ্মাপাড়ি
পদ্মা নদী এখন পায়ে হেঁটে পাড়ি দেওয়া যাবে। ৪২টি খুঁটিতে ৪১টি স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে নদীর দুই পাড় যুক্ত হলো। দৃশ্যমান পুরো সেতুর ৬ হাজার ১৫০ মিটার। এর মাধ্যমে সংযোগ হয়েছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের। সর্বশেষ স্প্যানটি সফলভাবে স্থাপনের মাধ্যমে শেষ হলো সেতুর স্প্যান বসানোর কার্যক্রম।
এখন মূল সেতুতে রেলস্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ বাকি আছে। বিজয়ের মাসে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হলো গোটা বিশ্ব।
২০১৪ সালে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। এরপর নানা বাধাবিপত্তি আর জটিলতার সম্মুখীন হয় প্রকল্পটি। নকশা জটিলতা, নদীশাসন কাজে প্রাকৃতিক বাধা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কারিগরি সমস্যা, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে ভাঙন, মহামারি ও বন্যা পরিস্থিতিসহ বেশ কিছু সমস্যা সেতুর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সব কিছুকে পেছনে ফেলে সেতুর মূল কাঠামো আজ দৃশ্যমান হয়ে গেল।
মাওয়া মাছ বাজার এলাকার চা দোকানদার আওলাদ হোসেন জানান, প্রথমে মনে হয়েছিল এ নদীতে সেতু নির্মাণ অবাস্তব কল্পনা। কিন্তু চোখের সামনেই ধীরে ধীরে কাজ এগিয়ে গেছে।
পদ্মাপাড়ের ট্রলার চালক বিল্লাল হোসেন জানান, সেতুর কাজের শুরু থেকেই অনেকেই আসেন সেতুর কাজ ঘুরে দেখতে। ট্রলারের মাধ্যমে তারা সেতুর কাজ দেখে আনন্দ পান। চোখের সামনেই সেতুর সব কাজ দেখেছি। সারাদেশ এখন এ সেতুতে যানবাহন চালানোর অপেক্ষায় আছে।
আজ সকাল থেকে পদ্মার আকাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কমলেও একটি স্প্যান থেকে আরেকটি স্প্যানের দৃশ্য চোখে অস্পষ্ট। শীতকে পাত্তা না দিয়ে অনেকে এসেছিলেন স্প্যান বসানো দেখতে। পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের বাড়তি উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়।
সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ স্প্যানটিতে আছে চীন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। দুই দেশের সম্পর্ক অটুট রাখার বার্তা লেখা আছে বাংলা, ইংরেজি ও চীনা ভাষায়।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সবগুলো স্প্যান বসানো সম্ভব হলো। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সেতুর কাজে গতি বাড়বে। তখন স্ল্যাব বসানোর কাজেও গতি বৃদ্ধি পাবে।
Comments