বেড়েছে বাগেরহাটের সুপারির কদর

ঘূর্ণঝড় আম্পানের প্রভাবে উৎপাদন কম হওয়ায় বাগেরহাটের সুপারির দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় প্রতি কুড়ি (২৩১টিতে এক কুড়ি) সুপারিতে দুই শ থেকে তিন শ টাকা বেশি পাচ্ছেন কৃষক।
Nut_Bagerhat_11Dec20.jpg
ঘূর্ণঝড় আম্পানের প্রভাবে উৎপাদন কম হওয়ায় বাগেরহাটের সুপারির দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় প্রতি কুড়ি (২৩১টিতে এক কুড়ি) সুপারিতে দুই শ থেকে তিন শ টাকা বেশি পাচ্ছেন কৃষক। ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণঝড় আম্পানের প্রভাবে উৎপাদন কম হওয়ায় বাগেরহাটের সুপারির দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় প্রতি কুড়ি (২৩১টিতে এক কুড়ি) সুপারিতে দুই শ থেকে তিন শ টাকা বেশি পাচ্ছেন কৃষক।

জেলার কচুয়া উপজেলায় এক হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে প্রায় চার হাজার ১১৪ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদিত হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার সকালে কচুয়ায় বসে জমজমাট হাট। অন্তত ২০টি জেলায় যায় বাগেরহাটের সুপারি। আকার ভেদে প্রতি কুড়ি সুপারি বিক্রি হয় পাঁচ শ থেকে সাত শ টাকায়। কচুয়া হাটে প্রায় কোটি টাকার সুপারি কেনা-বেচা হয়।

এ ছাড়া, উপজেলার বাধাল, তালেশ্বর ও গজালিয়া হাটের ধুম পড়ে কেনা-বেচার। বাগেরহাটের অন্য উপজেলাগুলোতে সুপারি উৎপাদন তুলনামূলক কম। পুরো জেলায় চার হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৬ হাজার টন সুপারি উৎপাদিত হয়।

আম্পানের প্রভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ায় এবার সুপারির চাহিদা বেড়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়েছে দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে কৃষকের শঙ্কাও। জলাবদ্ধতা ও মাটির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই উৎপাদন কমছে।

কচুয়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সুপারি বিক্রেতা শিশির দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আম্পানের কারণে সুপারির ফুল পড়ে যাওয়ায় এবার উৎপাদন কম হয়েছে।’

একই উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের অসীম চক্রবর্তী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা ও লবণ পানির জন্য উৎপাদন কমছে।’

জেলার শতাধিক শ্রমিকের পরিবার এই খাতে নির্ভরশীল। সুপারি শ্রমিক প্রণব ও মোতালেব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা সুপারি বাছাই করে প্রতি কুড়ি সুপারি বস্তাবন্দি করি। এক কুড়ি সুপারি বস্তাবন্দি করলে পাঁচ টাকা পাই। সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। ওই দিন আমরা ভোর থেকে রাত ১১টার পর্যন্ত কাজ করি। প্রতি হাটে ১৩ শ থেকে ১৪ শ টাকা আয় হয়। এই টাকায় আমাদের সংসার চলে।’

কচুয়া বাজার সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ বাওয়ালী বলেন, ‘এবার উৎপাদন তুলনামূলক কম হলেও বাজার ভালো।’

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান মনে করেন, কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হলে এই খাতে আরও উন্নয়ন সম্ভব।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কচুয়ায় ১৮ হাজার কৃষক সুপারি চাষে সম্পৃক্ত। ঝড় ও লবণাক্ততার জন্য প্রতি বছর উৎপাদন কমেছে। তালেশ্বর এলাকার স্লুইচ গেট বন্ধ করে দেওয়া গেলে লবণাক্ততা কমবে। তাহলে উৎপদন বাড়বে।’

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক সঞ্জয় দাস বলেন, ‘সুপারির উৎপাদন বাড়াতে হলে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago