শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ

টানা কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় নাকাল হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার স্বাভাবিক জীবনযাপন। বিশেষ করে দুই জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর তিন শতাধিক চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
Lalmonirhat.jpg
তীব্র শীত থেকে বাঁচতে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছেন লালমনিহাটের মানুষ। ছবি: স্টার

টানা কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় নাকাল হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার স্বাভাবিক জীবনযাপন। বিশেষ করে দুই জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর তিন শতাধিক চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।

এসব চরাঞ্চলে কারও কারও শীতবস্ত্র থাকলেও অধিকাংশ মানুষের নেই প্রয়োজনীয় পোশাক। সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য জুটলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বাজার থেকে গরম বস্ত্র কেনার সামর্থ্যও নেই অনেকের। তীব্র শীতের সঙ্গে লড়াই করে কষ্টসহিষ্ণু জীবনযাপন করছেন চরবাসী।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারেডাব গ্রামের কৃষি শ্রমিক মোবারক আলী (৫২) জানান, শীতের প্রকোপ উপেক্ষা করেই সাতসকালে চরে যেতে হয় কৃষি কাজ করতে। শীত নিবারণে গরম কাপড় নেই তাদের। ইচ্ছা না থাকলেও সংসারের তাগিদে তাদের ছুটতে হয় কাজের সন্ধানে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর কালমাটি এলাকার কৃষক আতিয়ার রহমান (৫৫) জানান, ঠাণ্ডায় শরীর থরথর কাঁপছে, কিন্তু কৃষি কাজের উপকরণ নিয়ে ছুটতে হচ্ছে চরে। ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে ফসলের জমিতে পানি সেচ দেওয়া আর ফসলের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের।

লালমনিরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রেজাউল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, জেলার ৫টি উপজেলার শীতার্ত দুঃস্থ মানুষের জন্য ২১ হাজার ৭০০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, কম্বল কেনার জন্য বিশ লাখ টাকা ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ এসেছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে শীতার্ত দুঃস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ চলছে। আরও ৬০ হাজার কম্বলের চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলার ৯টি উপজেলার শীতার্ত দুঃস্থদের জন্য ৩৫ হাজার কম্বল ও নগদ ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে এবং এগুলো বিতরণ চলমান রয়েছে। আরও এক লাখ কম্বলের চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের ২ হাজার ৭৬০টি কম্বল উপজেলার শীতার্ত দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ চলছে, তবে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। জেলা প্রশাসনকে আরও কম্বলের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে দুঃস্থ মানুষের কষ্ট বেড়েছে অনেক। আমরা সাধ্যমতো শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, তবে চাহিদা অনেক।’

কুড়িগ্রামের রাজাহারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস আজ শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

9h ago