‘আমার মেয়ের মরদেহটি অন্তত দেন’

লাকিংমে চাকমার জন্ম নিবন্ধন সনদ। ছবি: সংগৃহীত

লাকিংমে চাকমা ছিল ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। চলতি বছরের জানুয়ারির পাঁচ তারিখ যখন তাকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় জন্ম সনদ হিসেবে তার বয়স ছিল ১৪ বছর ১০ মাস।

অপহরণের ১১ মাস ৬ দিন পর লাকিংমে চাকমার বাবাকে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার হাসপাতালের মর্গে মেয়েকে দেখার জন্য ডাকে পুলিশ। তবে, অপহরণকারীদের একজনের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে হয়েছে জানিয়ে বাবা লালা অং চাকমার কাছে মেয়ের মরদেহ হস্তান্তর করেনি পুলিশ।

লাকিংমে চাকমার বাবা লালা অং চাকমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করা হলো, ধর্মান্তরিত করা হলো, অবশেষে মেরে ফেলা হলো, আর এখন মেয়ের মরদেহ আমাদের দিচ্ছে না।’

লালা অং কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শিলখালী চাকমা পাড়ার বাসিন্দা।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘জানুয়ারির ৫ তারিখ অজ্ঞাত কিছু মানুষ আমার বাড়ি থেকে আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। মামলা করার জন্য টেকনাফ থানায় গেলে তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার সাহা আমাদের মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেন। তখন পুলিশ অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদেরকে সহযোগিতা করেন।’

‘পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি অপহরণকারীরা ছিল স্থানীয় মো. আতাউল্লাহ, ইয়াসিন, মো. ইসা, আবুইয়াসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন’ বলেন তিনি।

অপহরণকারীদের সবার বয়স ২২-২৮ এর মধ্যে হবে বলে জানান তিনি।

‘যেহেতু পুলিশ আমাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি, তাই আমি জানুয়ারির ১৭ তারিখ কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য মামলা করি,’ বলেন লালা অং।

পরবর্তীতে কোর্ট পিবিআইকে বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয় বলে জানান লাকিংমের একজন নিকটাত্মীয় উ মং চাকমা।

অসহায় বাবা লালা অং চাকমা বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যারা অপহরণের পর নিষ্ঠুরভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।’

কক্সবাজার থানার ওসি শেখ মুনীর উল গিয়াস বলেন, ‘লাকিংমের অপহরণের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। যেহেতু তার বিয়ে হয়েছিল তাই আমরা তার মরদেহ হস্তান্তর করিনি। আমরা আদালতের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।’

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

6h ago