অরক্ষিত ময়মনসিংহের বধ্যভূমি
স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও অরক্ষিত রয়ে গেছে ময়মনসিংহের বেশিরভাগ বধ্যভূমি। ময়মনসিংহ জেলার ১৩টি উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩৩টি গণকবর শনাক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, গণকবরের মধ্যে প্রায় দশটি সরকারের নির্দেশে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পল্লী এলাকায় ৫০ শতাংশেরও বেশি গণকবর এখনও অবহেলায় পড়ে আছে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও জেলার বেশিরভাগ বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক বিমল পাল।
তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে এখনও বধ্যভূমিগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
বিমল পাল বলেন, শুধুমাত্র ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে থানারঘাট ডাকবাংলোর পেছনের বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে এবং এই বধ্যভূমিতেই শুধুমাত্র গণহত্যা দিবস পালন করা হয়।
ময়মনসিংহ সার্কিট হাউসের নিকটবর্তী ব্রহ্মপুত্র তীরে ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেস্ট-হাউসের পাশের বধ্যভূমিতে শুধুমাত্র নামফলক লাগানো হয়েছে বলে জানান বিমল পাল।
ময়মনসিংহ শহরের আরও ছয়টি অরক্ষিত বধ্যভূমি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলো হলো— কেওয়াটখালী রেলওয়ে কলোনি বধ্যভূমি, কালিবাড়ী (প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পিছনে) বধ্যভূমি, ছোটবাজার বধ্যভূমি, নতুনবাজার বধ্যভূমি, দুধমহাল বধ্যভূমি ও চকবাজার বধ্যভূমি।
বিমল পাল অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর সরকার বধ্যভূমি সংরক্ষণের জন্য অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু এগুলো অরক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। তিনি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার দাবি জানান।
গত ৪৯ বছরে বেশকিছু বধ্যভূমির জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। অধিকাংশ বধ্যভূমি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. আব্দুর রব।
জানতে চাওয়া হলে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জেলার সব বধ্যভূমি চিহ্নিত করার কাজ চলছে এবং চিহ্নিত বধ্যভূমিগুলোর উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।’
Comments