মাশরাফির ৫ শিকারে ফাইনালে খুলনা

Mashrafe Mortaza
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জহুরুল ইসলামের ভিত গড়ে দেওয়ার পর ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসানদের ঝড়ে বিশাল পূঁজি পেয়েছিল খুলনা। এই পূঁজি টপকাতে যারা ছিলেন সবচেয়ে বিপদজনক সেই লিটন দাস, সৌম্য সরকারকে ছাঁটলেন মাশরাফি মর্তুজা। পরে নিলেন আরও ৩ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার পেলেন ৫ উইকেট।  তার মুন্সিয়ানায় রানেভরা উইকেটে দারুণ জয়ে ফাইনালে উঠে গেল জেমকন খুলনা।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম কোয়ালিফায়ারে অনেকটা এগিয়ে ছিল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। লিগ পর্বের ৮ ম্যাচের সাতটাতেই জিতেছিল তারা। অন্যদিকে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছিল খুলনা।  কিন্তু আসল ম্যাচেই দেখা গেল ভিন্ন ছবি। খুলনার ২১০ রানের জবাবে চট্টগ্রাম থামল   ১৬৩ রানে। ম্যাচ হারল ৪৭ রানে।  ৩৫ রানে মাশরাফি নিলেন ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার সেরা বোলিং। এদিন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে উইকেট সংখ্যাও দেড়শো ছাড়িয়ে নেন তিনি।

হারলেও অবশ্য ফাইনালে যাওয়ার আরেকটা সুযোগ থাকছে চট্টগ্রামের। মঙ্গলবার বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে তারা। 

মাথার সামনে বিশাল লক্ষ্য। তবে শিশিরভেজা উইকেটে বল বেশ ভালোভাবে ব্যাটে আসায় সবই ছিল সম্ভব। টুর্নামেন্টের সেরা উদ্বোধনী জুটি লিটন দাস-সৌম্য সরকারের কাছে প্রত্যাশাও ছিল বেশি।

মাশরাফির প্রথম ৫ বলে  চার-ছয়ে ১৩ রানও তুলে ফেলেছিলেন লিটন। শেষ বলটায় সৌম্য করে বসলেন মহাভুল। শর্ট বল উড়ানোর মতই ছিল। স্কয়ার লেগ বা লং অন দিয়ে পাঠাতে পারতেন অনায়াসে। তিনি বেছে নিলেন মিড উইকেট এলাকা। যেখানে লেগ সাইডের বৃত্তের বাইরে দাঁড়নো একমাত্র একমাত্র ফিল্ডার আছেন ডিম মিড উইকেটে। শামীম পাটোয়ারির হাতেই জমা পড়ল সহজ ক্যাচ।  

পরের ওভারেও আল-আমিনের কাছ থেকে ফায়দা উঠিয়ে লিটন দিচ্ছিলেন আশা। মাশরাফিতে কাবু তিনিও। মাশরাফি কিছুটা নিচু বলে বলে ব্যাট লাগাতে পারলেন না। পুল খেলতে গিয়ে বোল্ড ১৩ বলে ২৪ করা টুর্নামেন্ট সেরা ব্যাটসম্যান।

তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে এরপর ঘুরে দাঁড়ানো শুরু পুরো আসরে নিষ্প্রভ থাকা মোহাম্মদ মিঠুন। দুজনের ব্যাটে আসে ৭৩ রানের জুটি। রানের চাপ থাকলেও নিভু নিভু আশা জ্বলছিল চট্টগ্রামের। বল বুঝে চড়াও হচ্ছিলেন তারা। রান রেটের চাপ কমাতে প্রতি ওভারেই মারার চাপও ছিল তাদের।

সেই চাপের মধ্যে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে  এই জুটিও ভাঙেন সেই মাশরাফি। তার কাটার বুঝতে  অপারগ জয় এক্সট্রা কাভারে দেন ক্যাচ।

৩০ বলে ফিফটি করা অধিনায়ক মিঠুন ফেরেন বড় অসময়ে। আরিফুলের স্লোয়ার পুল করতে গিয়ে প্রায় লিটনের আউটের রিপ্লেই দেখান যেন তিনি। বোল্ড হন ৩৫ বলে ৫৩ করে। খুলনার সঙ্গে আগের দেখায় ম্যাচ জেতানোর নায়ক শামসুর রহমান ছিলেন। তবে কাজটা তার ছিল নাগালের বাইরে। পারেননি তিনি। শেষ ওভারেও তাকেও ছেঁটেছেন মাশরাফি। তবে উইকেটের পেছনে চোখ ধাঁধানো ক্যাচ নিয়ে বড় অবদান বদলি কিপার এনামুল হক বিজয়ের।  ওই ওভারেই মোস্তাফিজকে আউট করে মাশরাফি নেন তার পঞ্চম উইকেট।

এর আগে জহুরুল খুলনাকে এনে দেন দুর্দান্ত শুরু। তার ব্যাটের ঝাঁজে পাওয়া সুর ধরে পরে চলে ছোটখাটো কিন্তু ভীষণ কার্যকর ঝড়। ইমরুল তিনে নেমে করে যান ১২ বলে ২৫। মাহমুদউল্লাহ মাত্র ৯ বলেই করেন ৩০। ১৪ বলে ২৮ আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। জহুরুল ১৩তম ওভারে আউট হওয়ার সময় করে যান ৫০ বলে ৮০ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

জেমকন খুলনা : ২০ ওভারে ২১০/৭  (জহুরুল ৮০ , জাকির ১৬, ইমরুল ২৫ , সাকিব ২৮, মাহমুদউল্লাহ  ৩০, আরিফুল ১৫, শুভাগত  ০* , শামীম ১ , মাশরাফি ৬*; নাহিদ ০/২১ , শরিফুল, সঞ্জিত ১/৫০, মোস্তাফিজ ২/৩১,  সৌম্য ০/৩১, মোসাদ্দেক ১/২৭)

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৯.৪ ওভারে ১৬৩  (লিটন ২৪ , সৌম্য ০, জয় ৩১, মিঠুন ৫৩, মোসাদ্দেক  ১৭, শামসুর ১৮ , সৈকত ৫ , নাহিদুল ৪ , মোস্তাফিজুর ০, সঞ্জিত , শরিফুল ; মাশরাফি ৫/৩৫ , আল-আমিন ০/৩২, সাকিব ১/৩২ , হাসান ২/৩৫, আরিফুল  ২/২৬)

ফল:  জেমকন খুলনা   ৪৭ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

Bangladesh Bank purchased another $313 million from 22 commercial banks in an auction yesterday, reacting to the sharp drop in the US dollar rate.

1h ago