চোর আখ্যা দিয়ে রাজশাহীতে ২ যুবককে রাতভর নির্যাতন, পায়ে ঢুকানো হয় পেরেক

রাজশাহীর তানোর উপজেলার দেবিপুর গ্রামে রোববার রাতভর এবং পরের দিন দুপুর পর্যন্ত দুজনকে চোর আখ্যা দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের একজনের পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঢুকিয়ে আহত করা হয়েছে।
রাজশাহী
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

রাজশাহীর তানোর উপজেলার দেবিপুর গ্রামে রোববার রাতভর এবং পরের দিন দুপুর পর্যন্ত দুজনকে চোর আখ্যা দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের একজনের পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঢুকিয়ে আহত করা হয়েছে।

পুলিশ ও দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার বিকেলে সেলুনের মালিক ফিরোজ কবির (২৪) ও ট্রলি চালক জসিম উদ্দিন (২৮) কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালটির উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, আজ চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে ফিরোজের ডান পা থেকে পেরেকটি অপসারণ করেছেন।

ফিরোজের বাবা জানান, তিনি সোমবার রাতে তানোর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মামুনুর রশিদ ও দেবিপুর গ্রামের আব্দুর রহিমসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়নি।

‘আমরা তার (ফিরোজের বাবা) অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করে শিগগিরই মামলাটি রেকর্ড করা হবে,’ তানোর থানার ওসি (পরিদর্শক) রকিবুল ইসলাম বলেন।

হাসপাতালে ফিরোজের সঙ্গে থাকা মামা কামাল হোসেন জানান, ফিরোজ ও জসিম রবিবার রাতে একটি মোটরসাইকেলে করে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাত ৯ টার দিকে তারা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, মামুন ও রহিমের নেতৃত্বে একদল গ্রামবাসী তাদের ঘিরে ফেলে চোর আখ্যা দিয়ে আটক করে।

দুজনকে দুটি প্লাস্টিকের চেয়ারে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় তাদের মোটরসাইকেলটি।

কামাল হোসেন ফিরোজকে উদ্ধৃত করে বলেন, হামলাকারীরা তাদের চোর হিসেবে স্বীকারোক্তি দিতে বলেছিল। অস্বীকার করায় পায়ে পেরেক গেঁথে দেওয়া হয় ফিরোজের।

পরে সোমবার বিকেলে নির্যাতনকারীদের একজন ফিরোজের মা ও বোনকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে দুজনকে হস্তান্তর করে। পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান।

কামাল জানান, নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই মর্মে সাদা কাগজে দুজনকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।

মামুন ও রহিমের সঙ্গে ফিরোজের পূর্ব শত্রুতা ছিল জানিয়ে কামাল বলেন, ফিরোজের দেবিপুর গ্রামে সেলুন ছিল। চুল পড়া নিয়ে রহিমের সঙ্গে শত্রুতা তৈরি হওয়ায় সে গ্রাম থেকে সেলুন সরিয়ে দেয়।

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, আমরা নির্যাতনের কথা শুনেছি এবং স্থানীয় পুলিশকে তদন্ত করে সিনিয়রকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিপোর্ট করার নির্দেশনা দিয়েছি।

Comments

The Daily Star  | English

Culprits of Khagrachhari, Rangamati violence will be brought to book: CA office

High-powered probe body to be formed; home adviser to visit Khagrachharai and Rangamati tomorrow

30m ago