বাড়ির উঠানে দিনমজুর সাহেব আলীর মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য

Saheb_Ali_16Dec20.jpg
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের দিনমজুর সাহেব আলী তার বাড়ির উঠানে গড়ে তুলেছেন শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র। সেখানে তিনি নির্মাণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের ৬৬টি স্মারক ভাস্কর্য। ছবি: স্টার

পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের দিনমজুর সাহেব আলী তার বাড়ির উঠানে গড়ে তুলেছেন শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র। সেখানে তিনি নির্মাণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের ৬৬টি স্মারক ভাস্কর্য। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও পাঁচটি ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তার।

তার পরিকল্পনায় আছে— ৭১ ফুট দৈর্ঘ্যের বাংলাদেশের মানচিত্র যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরগুলো আলাদাভাবে দেখানো হবে; বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৭১ ফুট দীর্ঘ উড়োজাহাজ; একটি ১৩ ফুট চার ইঞ্চি দীর্ঘ কারাগার যেখানে বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনের মোট ১৩ বছর চার মাস কারাবন্দি ছিলেন; একটি শহীদ মিনার এবং জাতীয় ফুলের ভাস্কর্য।

পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সাহেব আলীর বাড়ি। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল মাত্র আট বছর। শিশু বয়সী হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া হয়নি। এখন তিনি একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করেছেন। সেখানে মোট ৭১টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্য থাকার কথা থাকলেও অর্থাভাবে পাঁচটি ভাস্কর্য নির্মাণ বাকি।

উঠানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণের অনুপ্রেরণার কথা জানাতে গিয়ে সাহেব আলী বলেন, ‘১৯৮৬ সালে আমি মুন্সিগঞ্জ শহরের একটি রাইস মিলে কাজ করতাম। রহিমা বেগম নামে একজন আমার সঙ্গে সেখানে কাজ করতেন। তার মুখেই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতার বহু ঘটনা শুনেছি।’

সাহেব আলী আরও বলেন, বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করতে গিয়ে বসত বাড়ির জমি বিক্রি করতে হয়েছে। পরে পাশের একখণ্ড জমিতে বিনোদন কেন্দ্রটি সরিয়ে এনেছেন।

আউলিয়াপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল জলিল হাওলাদার বলেন, এসব ভাস্কর্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম কিছুট হলেও মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।

পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি স্বপন ব্যানার্জী বলেন, দিনমজুর হয়েও সাহেব আলী ভাস্কর্যগুলো নির্মাণ করে দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছেন। সরকার বা স্থানীয় স্বচ্ছল ব্যক্তিদের উচিত তাকে ভাস্কর্য নির্মণে সহায়তা করা।

Comments