জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের আহ্বান
বাংলাদেশে ক্ষতিকর কয়লা ও লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়ন না করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আজ শুক্রবার ‘এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সংলাপে এ আহ্বান জানান বক্তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ এই সংলাপের উদ্বোধন করেন।
এ সময় আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশের যেখানে নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সব ধরনের সুযোগ ছিল, সেখানে বাংলাদেশ ক্ষতিকর ও পরিবেশ দূষণকারী জ্বালানী ও বিদ্যুতের পথে অন্ধভাবে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের কোনো কয়লা বা পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল না, ফলে আমরা শুরু থেকেই নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে শুরু করতে পারতাম। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হলো সরকার ও তাদের বিদেশি পরামর্শদাতারা বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম ও নোংরা জ্বালানি বেছে নিলেন। যেখানে তাদের হাতে যথেষ্ট বিকল্প ছিল।’
‘আমাদের বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনায় (পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-পিএসএমপি) বাংলাদেশি কোনো পরামর্শক জড়িত নেই। সবাই ছিলেন জাইকা বা জাপান থেকে। এই মহাপরিকল্পনা আসলে জাপান, চীনসহ অন্যান্য দেশ এবং তাদের সাবকন্ট্রাকটরদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই কাজ করছে,’ আরও বলেন তিনি।
পরিবেশবিদ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যেখানে উন্নত বিশ্ব নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে চাপের মুখে আছে, সেখানে বাংলাদেশের মতো দেশে এই দাবি আমরা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারি।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা একটি জন-নেতৃত্বাধীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নীতিমালা চাই। যেটি মানুষের জন্য পরিচ্ছন্ন, সুলভ ও স্বল্প মূল্যে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করবে।’
যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডব্লিউজিইডি), এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), ব্যাংকট্র্যাক, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), গ্রিন ক্যামেল বেল (জিসিবি), গ্রোথওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি প্রজেক্ট (আইএপি), ইনসাফ (ইন্ডিয়ান সোশাল অ্যাকশন ফোরাম), জাপান সেন্টার ফর সাসটেইনেবল এনভায়নমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি (জ্যাকসেস), ক্রুহা ইন্দোনেশিয়া (পিপলস কোয়ালিশন ফর দ্য রাইট টু ওয়াটার), মার্কেট ফোর্সেস (অস্ট্রেলিয়া), এনজিও ফোরাম অন এডিবি, ফুলবাড়ি সলিডারিটি গ্রুপ (পিএসজি), রিকোর্স, দ্য সানরাইজ প্রোজেক্ট, উর্গেওয়াল্ড (জার্মানি)।
Comments