কলেজের পদ দখলে নিতে ‘তৃতীয় পক্ষ’ বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে
কলেজের পরিচালনা পর্ষদের পদ দখলে ‘তৃতীয় পক্ষ’ পরিস্থিতির সুযোগ নিতে বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত। আজ শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় যুবলীগের সভাপতি ও কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য আনিসুর রহমানসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসপি তানভীর আরাফাত বলেন, তদন্তে আমার যেটি এখন পর্যন্ত জেনেছি তা হলো, কলেজের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। কয়া মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চুনু এবং অধ্যক্ষ হারনুর রশিদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব আছে বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, কলেজের দারোয়ান ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনাটি দেখেছেন। দুর্বৃত্তরা রাত ১১টার দিকে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল আড্ডার ছলে। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে হাতুড়ি দিয়ে তিনটি স্থানে তিনটি আঘাত করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।
এসপি বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় চার জন সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কলেজের গভর্নিং বডির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত বছর কলেজে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে নিয়োগে সভাপতি নিজামুল হক অর্থ লেনদেন করেছেন। এ ছাড়া নিজামুল আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত। তিনি অকারণে কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেন। নিজামুল প্রায় পাঁচ বছর কলেজের সভাপতি পদে আছেন।
এসপি জানান, ‘পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড আবেদন করবে। বেশ কয়েকটি সমস্যাকে সামনে রেখে, একটি গোষ্ঠী উত্তেজনা ছড়াতে একটি বাজে উপায়ের সহায়তা নিয়েছে, তারা বাঘা যতীনের মতো এক মহামানুষের আবক্ষে আঘাত করেছে।
এদিকে, বেলা ১১টার দিকে কয়া মহাবিদ্যালয়ে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কুষ্টিয়া শহরের থানা মোড়ে জেলা জাসদের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা একইভাবে হাতুড়ি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও তাদের সহযোগী দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন-
বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: ইউনিয়ন যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩
বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: ৪ জন ছাড়া পেলেন, অধ্যক্ষের মামলা
Comments