১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ন্যূনতম জিপিএ নির্ধারণ
দেশের ১৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের জন্য ন্যূনতম জিপিএ নির্ধারণ করা হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল যোগ করে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য জিপিএ ৬, বাণিজ্য বিভাগের জন্য জিপিএ ৬.৫ ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জিপিএ ৭ থাকতে হবে।
এইচএসসি সিলেবাসের ভিত্তিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হবে। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ই পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে। এ বছর ও গত বছরের উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনুষ্ঠিত এই সভা শেষে জবি উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বহু নির্বাচনী প্রশ্ন বা এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ক্ষেত্রে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য আলাদাভাবে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম স্কোর ঠিক করতে পারবেন।’
‘কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কমলে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ (জিপিএ) যোগ করে ন্যূনতম ৭ থাকতে হবে।’
একইভাবে, বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ যোগফল ৬.৫ এবং মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য নুন্যতম জিপিএ ৬ প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।
‘তবে কোনও পরীক্ষায় জিপিএ ৩ এর কম থাকলে পরীক্ষার জন্য আবেদন করা যাবে না,’ যোগ করেন তিনি।
ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভর্তি প্রক্রিয়ায় এসএসসি ও এইচএসসি ফলাফল বিবেচনায় নেওয়া হবে কিনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এ ছাড়া, দ্বিতীয়বার ভর্তিচ্ছুদের সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, তাও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন এই দুই উপাচার্য।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর দেশের ১৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের সুবিধার কথা বিবেচনায় কেন্দ্রীয়ভাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো--ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বছর ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার কথা জানায়। পরে ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে।
তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এতে রাজি হয়নি।
Comments