নিজেকে বদির সন্তান দাবি করে যুবকের মামলা

bodi.jpg
আব্দুর রহমান বদি। স্টার ফাইল ফটো

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে পিতা দাবি করে এক যুবক আদালতে মামলা করেছেন।

মোহাম্মদ ইসহাক (২৬) নামের টেকনাফের ওই যুবক বদিকে পিতা দাবি করে গত ১৩ ডিসেম্বর টেকনাফের সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলার আর্জিতে তিনি তার জন্ম পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানান। মামলায় আবদুর রহমান বদির চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলামকেও বিবাদী করা হয়েছে।

বিচারক জিয়াউল হক মোহাম্মদ ইসহাকের অভিযোগ আমলে নিয়ে বদির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী কফিল উদ্দীন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আগামী ১৪ জানুয়ারি বিবাদী আবদুর রহমান বদিকে আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে সমনের জবাব দিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাদী ইসহাক আদালতের আর্জিতে উল্লেখ করেন, ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল তার মা সুফিয়া খাতুনকে কলেমা পড়ে বিয়ে করেন আবদুর রহমান বদি। বদির বাবার হোটেলে কর্মরত মৌলভী আব্দুস সালাম তাদের বিয়ে পড়ান। হোটেলের দারোয়ান এখলাস মিয়াসহ আরও তিন-চারজন বিয়েতে সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু বদির বাবা এজাহার মিয়া কোম্পানী এ বিয়ে মেনে নেননি। পরে জোর করে তাদের বাড়ির মিস্ত্রী মোহাম্মদ ইসলামের সঙ্গে তার মাকে ১৯৯৪ সালের ৪ এপ্রিল দ্বিতীয় বিয়ে দেন। এ বিয়েও পড়ান মৌলভী আব্দুস সালাম। মোহাম্মদ ইসলামের সঙ্গে তার মায়ের বিয়ের পাঁচ মাস পর ১৯৯৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার জন্ম হয়। তার জন্ম নিবন্ধন সনদে পিতার নাম মোহাম্মদ ইসলাম উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসহাক সাংবাদিকদের জানান, ‘ছোটবেলা থেকে আমি মায়ের কাছ থেকে শুনে আসছি যে, আবদুর রহমান বদি আমার বাবা। কিন্তু তিনি কখনো বাবার স্নেহ দেননি। সন্তান হিসেবে স্বীকৃতির দাবি নিয়ে মায়ের হাত ধরে অসংখ্যবার বাবা আবদুর রহমান বদির কাছে গিয়েছি আমি। কিন্তু  নানারকম লাভ-লোকসানের সমীকরণ দেখিয়ে আমাকে এবং মাকে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। মা-ও তার অবাধ্য হননি এতদিন। মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। ছোটবেলা থেকে আমি ও  মা মৌলভী আবদুস সালামের কাছে আশ্রিত। অভাব অনটনে চলছে আমাদের সংসার। বিষয়টি নিয়ে আমি ও মা অনেকবার বাবা আবদুর রহমান বদির ছোটবোন শামসুন্নাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারাও বিষয়টি ঘরোয়াভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বদি সাহেব কৌশলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। সম্প্রতি টেকনাফে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন শাওন নামে এক ছেলে ও সানিয়া নামে এক মেয়ে ছাড়া তার আর কোনো সন্তান নেই। এ কথা শোনার পর আমি মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নেই। তাই আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।’

ইসহাক জানান যে তিনি কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে সম্মানসহ স্নাতক পাশ করেছেন। এখন মাস্টার্সে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন।

জন্ম নিবন্ধন সনদে পিতার নামের ব্যাপারে তিনি বলেন, পিতার নাম আবদুর রহমান বদি উল্লেখ করে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য টেকনাফ পৌরসভায় আবেদন করেছিলেন। তখন বদির চাচা মেয়রের দায়িত্বে থাকায় তাকে সনদ দেয়নি। পরে তিনি বাধ্য হয়ে ২০১১ সালের জুনে পিতার নাম মোহাম্মদ ইসলাম উল্লেখ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ নেন।

Comments