২৫ কোটি টাকায় মোংলা বন্দরের জন্য আধুনিক পানি শোধনাগার
বাগেরহাটের মোংলা বন্দর ও আশপাশের এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক পানি শোধনাগার।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশে দিগরাজ নামক স্থানে ৩৩ শতক জমির ওপর ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে এই পানি শোধনাগার।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শেষে অথবা ২০২২ সালের শুরুতে শোধনাগারটি চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
উপকূলীয় অবস্থানের কারণে মোংলা বন্দরের চারিদিকে লবণাক্ত পানি। মোংলা পৌরসভার মানুষ বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে আছে। মিঠা পানির অভাবে বন্দরের বেশীরভাগ কর্মীকে বাগেরহাট ও খুলনায় থাকতে হয়।
মোংলা বন্দরের শ্রমিকরা জানান, তাদের জীবন ও জীবিকা মোংলা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বন্দরের ভেতরে কোথাও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন জায়গা থেকে জারের পানি কিনে তাদের খেতে হয়।
মোংলা বন্দরের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক জানান, শোধনাগারে উৎপাদিত পানির ৫০ ভাগ বন্দরে ব্যবহার করা হবে। ১০ ভাগ পানি বিক্রি করা হবে এবং বাকী পানি জাহাজ ও পার্শ্ববর্তী কারখানায় দেওয়া হবে। পানির চাহিদা মিটে গেলে কর্মকর্তারা মোংলাতেই থাকতে পারবেন।
এই পানি শোধনাগার প্রকল্পের পরিচালক অনুপম গাইন বলেন, ‘আমাদের বন্দর এবং জাহাজগুলোর জন্য দৈনিক তিন হাজার টন পানি প্রয়োজন। আমরা এখন ফয়লা এলাকার কয়েকটি নলকূপ থেকে এক হাজার ৮০০ টন পানি দৈনিক সরবরাহ করছি। চাহিদা মেটাতে আমাদের আরও এক হাজার ২০০ টন পানির প্রয়োজন। আমাদের পানি শোধনাগার প্রতিদিন চার হাজার টন মিঠা পানি উৎপাদন করবে এবং এটি দিন দিন বাড়বে। আমরা যদি বিদেশি জাহাজগুলোতে পানি সরবরাহ করতে পারি, তবে আমরা প্রতি টন পানিতে ১০ ডলার পাব। ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করি, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বা ২০২২ সালের শুরুতে সব কাজ শেষ করতে সক্ষম হব।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘বন্দরে আগত জাহাজের সংখ্যা বাড়ছে। বন্দরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে ভৌগোলিক কারণে এখানে মিঠা পানির ঘাটতি রয়েছে। আমরা এই সংকট সমাধানের জন্য এবং মিঠা পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। এর অংশ হিসেবে বন্দরে একটি আধুনিক পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি আশা করেন, পানি শোধনাগার নির্মাণ হয়ে গেলে বন্দরের মিঠা পানির চাহিদা মিটে যাবে।
Comments