বাংলাদেশ ও ভারত রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। দুই দেশের এই সম্পর্ক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
qader
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের । ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। দুই দেশের এই সম্পর্ক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন অধিকতর উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং উন্নয়নমুখী। ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ১৯৭১ এর রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধন সময়ের পরিক্রমায় দিন-দিন নবতর মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে।’

শান্তিপূর্ণভাবে দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা ছিটমহল বিনিময় তুলে ধরেন তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মামলায় ভারত আপিল না করে বন্ধুসুলভ যে আচরণ করেছে, তা সম্পর্কের সূত্রকে আরও সুদৃঢ় করেছে।’

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে, তার মাধ্যমে তিস্তা সমস্যা ও অন্যান্য নদীর পানি বন্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তিস্তা পানি বণ্টন অচিরেই হতে পারে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ও ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকলে অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সহজেই সমাধান সম্ভব, যার প্রমাণ বাংলাদেশ ও ভারত। দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় সমস্যার সমাধান দুদেশের পারস্পরিক আস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।’

সীমান্ত হত্যার বন্ধের বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত হত্যার বিষয়ে দুদেশের মধ্যে বৈঠক চলছে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড জিরোতে আনার বিষয়ে সফল হব বলে আশা করছি। সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে দুদেশের সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। আজকের এই সুসম্পর্কের সূচনা করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় দুদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে।’

করোনা ভ্যাকসিনের ব্যাপারে ভারত সরকার বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের আজকের যে সম্পর্ক, দুই দেশের এই সম্পর্কের জন্য আওয়ামী লীগের অনেক অবদান রয়েছে।’

করোনাভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগ অনেক নেতা-কর্মীদের হারিয়েছে। তিনি এই সব নেতা-কর্মীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে এসে জীবন উৎসর্গকারী অর্ধশতাধিক ভারতীয় সৈনিকের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, ‘আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পাইলট হিসেবে। তাই আমি খুব গর্বিত।’

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরঞ্জীব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের স্পিরিট। বাংলাদেশের জন্য তার আত্মত্যাগ এ দেশের জনগণ ভুলতে পারবে না। এ দেশ স্বাধীন হয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদ, নারীর সম্ভ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে।’

এর আগে, সকাল ১১টায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছালে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাকে স্বাগত জানান।

পরে দোরাইস্বামী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।

এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্যমন্ত্রী ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম ও এডভোকেট আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago