ক্ষমতার শেষ চার সপ্তাহে যা করতে পারেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ফটো রয়টার্স

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ নিচ্ছেন আগামী ২০ জানুয়ারি। এদিকে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও হোয়াইট হাউস ছাড়তে রাজি নন। ট্রাম্পের শেষ মাসে প্রেসিডেন্টের অফিসে কী হতে পারে তাই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

পরাজয়ের পর থেকে ট্রাম্প নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত তার আইনি লড়াইয়ের প্রতিটি প্রচেষ্টাই ব্যর্থ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কয়েক সপ্তাহের কার্যক্রম ও পরিকল্পনা কী হতে পারে এ নিয়ে একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলজাজিরা।

আলজাজিরা জানায়, ক্ষমতা ছাড়ার আগে ট্রাম্প মূলত চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারেন। 

ইলেকটোরাল কলেজ ভোট প্রত্যাখ্যানে কংগ্রেস সদস্যদের রাজি করানো 

চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরও, ট্রাম্প ও তার কিছু রিপাবলিকান সমর্থক এখনও নির্বাচনি ফল বাতিলের চেষ্টা করছেন। গত ১৪ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত গণনায় বাইডেন ৩০৬ ও ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।

আগামী ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট গণনার জন্য আহ্বান জানানো হবে।

আগামী মাসে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে কোনো সদস্য চাইলেই কোনো রাজ্যের নির্বাচনী ভোটের ফল নিয়ে আপত্তি তুলতে পারবেন। যদি কোনো রাজ্যের একজন সিনেট সদস্য ও একজন হাউস সদস্য একসঙ্গে ওই রাজ্যের ভোট নিয়ে আপত্তি তোলে, তবে এ নিয়ে অধিবেশনে দুই ঘণ্টার বিতর্ক চলবে।

বিতর্কের পর, প্রতিটি সদস্য ভোট দেবে। যদি হাউস ও সিনেট উভয়েরই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা ভোটের বিরুদ্ধে মত দেন তবে নির্বাচনী ভোটকে বাতিল ঘোষণা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৮৭ সালের পর আর কোনও নির্বাচনে এমনটি ঘটেনি।

গত সোমবার হাউসের বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে কয়েকজন প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে, তারা নির্দিষ্ট রাজ্যের নির্বাচনী ভোটের বিষয়ে কংগ্রেসে আপত্তি জানাবেন।

ট্রাম্প নিজেও এ নিয়ে টুইট করেছেন।

তবে, কোনও বর্তমান রিপাবলিকান সিনেটর এখনও পর্যন্ত কোনও হাউস সদস্যদের সঙ্গে কংগ্রেসে আপত্তি উত্থাপন করার কথা জানাননি। কয়েকজন সিনেটর জানিয়েছেন, এটি করে তেমন কোনো লাভ নেই। 

বিশেষ কাউন্সেল

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম দাবি করে তদন্তের জন্য বিশেষ কাউন্সেল নিয়োগে জোর দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে নির্বাচনী কর্মকর্তা বা ফেডারেল তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত কোনো অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পাননি।

সোমবার, অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেছেন, ‘যদি আমি মনে করতাম যে এই পর্যায়ে স্পেশাল কাউন্সেল প্রয়োজন তাহলে আমি তাই করতাম। কিন্তু আমি এটা করিনি, আমি করবোও না।’

গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেছেন উইলিয়াম বার।

এছাড়াও, জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যবসা–বাণিজ্যে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ নিয়ে ফেডারেল তদন্ত নিয়েও ট্রাম্প বিশেষ কাউন্সেল নিয়োগ চান বলে জানা গেছে।

উইলিয়াম বার বলেন, ‘বিষয়টি বর্তমানে বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা দায়িত্বশীল ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত করছেন। কাউকে স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।

ক্ষমা

বড়দিন উপলক্ষে বুধবার ১৫ আসামিকে ক্ষমা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাদের মধ্যে দুই জন রিপাবলিকান দলের সাবেক আইনপ্রণেতা রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ট্রাম্পের ক্ষমা পাওয়া আসামিদের মধ্যে ইরাকে বেসামরিক জনগণকে হত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সামরিক ঠিকাদার ব্ল্যাক ওয়াটার’র চার রক্ষীও রয়েছে।

এর আগে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকেও ক্ষমা করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আলজাজিরা জানায়, ট্রাম্পের ক্ষমার তালিকায় ট্রাম্পের উপদেষ্টা রজার স্টোন, স্টিভ ব্যানন ও পল মনাফোর্ট, সাবেক এনএসএ কনট্রাক্টর এডওয়ার্ড স্নোডেন এবং উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও থাকতে পারেন।

মার্শাল ল

প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকার প্রচেষ্টায় ট্রাম্প মার্কিন সামরিক বাহিনীকেও যুক্ত করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাইকেল ফ্লিন কিছুদিন আগে এটি প্রকাশ্যে জানান।

নিউজম্যাক্স টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লিন বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) সুইং স্টেটগুলোর মধ্যেও আদেশ দিতে পারেন, যদি তিনি চান এইসব রাজ্যে তিনি সামরিক সহযোগিতা নিতে পারেন এবং প্রতিটিটিতেই পুনরায় নির্বাচন করতে পারেন।’

ফ্লিনের এমন মন্তব্যে আর্মি সেক্রেটারি রায়ান ম্যাকার্থি এবং চিফ অব স্টাফ জেনারেল জেমস ম্যাককনভিল শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ‘মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারনে মার্কিন সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের ভূমিকা থাকে না’।

জানা গেছে, শুক্রবার এক বৈঠকে, সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়ার ধারণাটি ট্রাম্পের শীর্ষ পরামর্শদাতারা খারিজ করে দেন। শুক্রবারের বৈঠকে ফ্লিনও অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago