অবশেষে কারামুক্ত সাংবাদিক কাজল

ফটোসংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল কারামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আজ শুক্রবার সকালে তার ছেলে মনোরম পলক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সকাল সোয়া ১১টার দিকে বাবা কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ১১টা ৪০ মিনিটে আমরা বাড়ি পৌঁছেছি। শারীরিকভাবে বাবা বেশ দুর্বল। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’

গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুটি আলাদা মামলায় ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে জামিন দেন। সে সময় তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, এখন সাংবাদিক কাজলের মুক্তিতে কোনো বাধা নেই। এর আগে একটি মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।

আজ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ‘তাকে সম্পূর্ণ বেআইনি প্রক্রিয়ায় আটক করে রাখা হয়েছিল। তিনি গুম হওয়ায় পরে যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি। সাংবাদিক কাজলকে ৫৪ ধারায় যশোর কারাগারে রাখা হয়েছিল। ৫৪ ধারায় তখনই গ্রেপ্তার করা হয়, যখন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে না। ৫৪ ধারা নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো প্রতিপালন করা হয়নি। ৯, ১০ ও ১১ মার্চ সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলা দায়ের হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারেননি। নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ না হলে তিনি ট্রাইব্যুনালে সময় চেয়ে আবেদন করবেন এবং ব্যাখ্যা করবেন, কেন তার তদন্তে আরও সময় প্রয়োজন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সময় চেয়ে আবেদন করেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। সাংবাদিক কাজলের মুক্তি আনন্দের। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় কোথাও এর প্রতিকার থাকার উচিত। আমি মনে করি, পুরো ঘটনার পেছনে-হয়রানির পেছনে যারা কল-কাঠি নেড়েছেন তাদের বিচারের আওতায় আনা দরকার।’

মাগুরা-১ আস‌নের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর গত ৯ মার্চ রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় কাজ‌ল, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জ‌নের বিরু‌দ্ধে ডি‌জিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। পরদিন কাজল নিখোঁজ হন। ১০ ও ১১ মার্চ হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় আরও দু‌টি মামলা দায়ের হয়।

যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে গত ৩ নভেম্বর নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে গ্রেপ্তার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তার বিরুদ্ধে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ এনে বিজিবি মামলা করে।

রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় বের হন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান না পেয়ে ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী নয়ন।

আরও পড়ুন:

সব মামলায় সাংবাদিক কাজলের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই

দু’একদিনের মধ্যে মুক্তি পেতে পারেন সাংবাদিক কাজল

জামিন পেলেও ছাড়া পাচ্ছেন না সাংবাদিক কাজল

সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা

অনুপ্রবেশের মামলায় জামিন, অন্য মামলায় কারাগারে সাংবাদিক কাজল

নিখোঁজ সাংবাদিক কাজল এখন বেনাপোল থানা হেফাজতে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি সাংবাদিক কাজল ৩ দিন ধরে নিখোঁজ

‘তোমার জন্য অপেক্ষা করছি’ বাবার উদ্দেশে ছেলের চিঠি

নিখোঁজ সাংবাদিক: মামলা নিতে ২ থানার লুকোচুরি

পুলিশ তদন্ত শুরুর পর সাংবাদিক কাজলকে অনুসরণ করা হচ্ছিল: অ্যামনেস্টি

সাংবাদিক কাজলকে নিয়ে এইচআরওর উদ্বেগ, দ্রুত খুঁজে বের করার তাগিদ

পিঠমোড়া করে হাতকড়ায় বাঁধা ক্যামেরাশিল্পী

বাবার জন্য, মুক্তির জন্য

Comments

The Daily Star  | English

Police struggle as key top posts lie vacant

Police are grappling with operational challenges as more than 400 key posts have remained vacant over the past 10 months, impairing the force’s ability to combat crime. 

11h ago