৫৬ বছরে বিটিভি, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা

আজ  বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) পা রাখল ৫৬ বছরে। ১৯৬৪ সালের আজকের দিনে ঢাকার তৎকালীন ডিআইটি ভবনের নিচতলায় টেলিভিশন চ্যানেলটির যাত্রা শুরু হয়েছিল।

সেই সময় এর নাম ছিল পাকিস্তান টেলিভিশন। রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল বিটিভি নামটি দেওয়া হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর।

ডিআইটি ভবন থেকে বিটিভিকে রামপুরায় নিজস্ব ভবনে আনা হয় ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। ১৯৮০ সালে রঙিন পর্দা উপহার দেয় বিটিভি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাইভ অনুষ্ঠান প্রচার করবে চ্যানলটি। দুটি স্টুডিও থেকে এই অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে।

বিটিভির রয়েছে চট্রগ্রাম কেন্দ্র ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড বিভাগ।

বিটিভির চট্রগ্রাম কেন্দ্র বর্তমানে ১২ ঘণ্টা সম্প্রচার করে থাকে। তা ১৮ ঘণ্টা সম্প্রচারে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা। এই কেন্দ্র থেকে বিটিভির শুধু সংবাদ প্রচার করা হয়। বাকি সময় এর নিজস্ব অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়ে থাকে।

বিটিভি ওয়ার্ল্ড ২৪ ঘণ্টা বিটিভির অনুষ্ঠান প্রচার ও পুনঃপ্রচার করে থাকে।

বিটিভির দেওয়া তথ্য মতে, চলতি বছরে চ্যানেলটি কিছু নতুন অনুষ্ঠান চালু করেছে। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য, ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘এই সময়’, প্রতিদিনের সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণ নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘খবর প্রতিদিন’, ‘স্বাস্থ্য জিজ্ঞাসা’, ‘বিটিভি সংলাপ’, সরাসরি গানের অনুষ্ঠান 'নিশি গুনগুন’ ও সুপ্রভাত বাংলাদেশ দর্শকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও, সম্প্রচার করা হচ্ছে ভিন্ন আঙ্গিকের রাজনৈতিক টক শো ‘বাংলাদেশ ফাইলস’, ধারাবাহিক তথ্যচিত্র ‘নাটের গুরু’ ও সকালের সরাসরি অনুষ্ঠান ‘শুভ সকাল বাংলাদেশ’।

নারীরা বিটিভির ‘ফিফটি পার্সেন্ট’ অনুষ্ঠানে কথা বলছেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে। শুরু হয়েছে  জেলা-ভিত্তিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’।

এক সময় বিটিভির নাটক মানেই ছিল দর্শকপ্রিয়তা। এর সাড়া জাগানো নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘সংশপ্তক’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’, ‘বহুব্রীহি’, ‘ঢাকায়  থাকি’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘জোনাকি জ্বলে’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘পারলে না রুমকি’, ‘বাবার কলম কোথায়’, ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’, ‘কূল নাই কিনার নাই’, ‘ধূপছায়া’ ইত্যাদি।

কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘মাটি ও মানুষ’ খুব সাড়া ফেলেছিল। বিটিভির ‘ইত্যাদি’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি এখনো সবচেয়ে  জনপ্রিয়। এছাড়া, বিটিভির ‘আনন্দমেলা’, ‘যদি কিছু মনে না করেন’, ‘নতুনকুঁড়ি’সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান একসময় ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।

বিটিভিতে প্রথম প্রচারিত ধারাবাহিক নাটকের নাম ‘দম্পতি’।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিটিভি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ।

‘বদলে যাবে বদলে দিবে’ শ্লোগান নিয়ে বিটিভি চলতি ডিসেম্বর থেকে নতুনভাবে যাত্রা করছে উল্লেখ করে মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেছেন, ‘গণমানুষের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ও বিনোদনের যে সাধারণ চাহিদা তা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে থাকি বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে। টেলিভিশনকে তো পিছিয়ে থাকলে চলে না; তাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে অন্যান্য টেলিভিশনের মতো আমরাও যুগোপযোগী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

‘বিটিভিকে সব সময় প্রান্তিক মানুষদের সুযোগ করে দিতে হয়’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ‘হয়তো  সেই কারণে কাদা-মাটির মানুষ ও অনুষ্ঠান আমাদের এখানে বেশি।’

‘জনরুচির ইতিবাচক পরিবর্তনকে অনুপ্রেরণা যোগানো হলো বাংলাদেশ  টেলিভিশনের দায়িত্ব। এ জন্য আমরা ডিজিটাল কনটেন্ট ও প্রোগ্রাম তৈরি করছি, যেগুলো এই মুজিবশতবর্ষে শিগগিরই প্রচারে যাবে,’ যোগ করেন মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ।

বিটিভি নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং বিটিভির অনুষ্ঠান ক্রমশই আধুনিক হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

8h ago