কুড়িগ্রাম

বালু তোলার সুবিধার্থে ব্রহ্মপুত্রের বুকে ৩০০ মিটারের রাস্তা

Kurigram.jpg
স্থানীয় বালু উত্তোলনকারী, বালু ব্যবসায়ী ও ড্রেজার মেশিন মালিকরা যৌথভাবে নিজেদের খরচে এ রাস্তা তৈরি করছেন। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চরে কর্তিমারী নৌকাঘাট এলাকায় নির্মিত হচ্ছে ৩০০ মিটারের একটি বালুর রাস্তা। স্থানীয় বালু উত্তোলনকারী, বালু ব্যবসায়ী ও ড্রেজার মেশিন মালিকরা যৌথভাবে নিজেদের খরচে এ রাস্তা তৈরি করছেন। চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুবিধার্থে রাস্তা নির্মাণের কথা জানানো হলেও তাদের উদ্দেশ্য নদের বুক থেকে বালু উত্তোলন করে পরিবহন করা।

স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী ও বালু পরিবহনকারী ট্রলির মালিক রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল করতে পারছে না। যাতায়াতের জন্য চরাঞ্চলের মানুষকে অনেক কষ্ট করতে হয়। ফসল ঘরে তুলতে এবং জমিতে গিয়ে কাজ করতে প্রতিদিন তাদেরকে চর এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। চরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ সুবিধার জন্য ৩০০ মিটার বালুর রাস্তাটি তৈরি করা হচ্ছে।’

‘রাস্তা নির্মাণে চরের লোকজন সাধ্যমতো সহায়তা করছে। আমরা কয়েকজন মিলে বেশিরভাগ অর্থ ব্যয় করছি’ এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাস্তাটি নির্মাণে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হবে।’

নদীর বুক থেকে বালু তুলে নির্মিত রাস্তা বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হবে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা রাস্তা নির্মাণে খরচ করছেন এবং তা কোনো না কোনোভাবে তো তুলতে হবে।

বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার মেশিনের মালিক শামিম মিয়া জানান, চরের লোকজনের যাতায়াত সুবিধার জন্য নদের বুকে বালুর রাস্তা নির্মাণে তারা আর্থিক সহায়তা করছেন। রাস্তাটি দিয়ে স্থানীয়রা চলাচল করতে পারবে আর নদের বুক থেকে বালু তুলে তা পরিবহনও করা হবে।

তারা দুর্গম চর থেকে বালু তুলেন। এতে নদের কোনো ক্ষতি হয় না বলেও দাবি করেন তিনি।

অপর ড্রেজার মেশিন মালিক মমিন ইসলাম জানান, নদের বুকে দুর্গম চর থেকে বালু উত্তোলন করার কাজে চরের অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। বালুর রাস্তাটি চরের মানুষের অনেক উপকারে আসবে।

তিনি বলেন, ‘নদের বুকে বালুর রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছি, এটা আমাদের ভালো কাজ। রাস্তার আশি শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, বাকি বিশ শতাংশ কাজ আগামী তিন-চারদিনে করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

কর্তিমারী নৌকাঘাটের ইজারাদার বাহেজ আলী জানান, নদে পানি কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তার সঙ্গে কথা বলে নৌকাঘাটের পাশে নদের বুকে বালুর রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে যত বালু পরিবহনের গাড়ি চলাচল করবে প্রতি গাড়ি বাবদ ২০ টাকা করে তাকে টোল দিতে হবে।

চর কর্তিমারী এলাকার কৃষক নেহাত উল্লাহ (৬৫) জানান, এই রাস্তা নির্মাণে চরবাসীরা কোনো চাঁদা দেয়নি। বালু ব্যবসায়ীরা নিজেদের টাকায় রাস্তা নির্মাণ করছে। তবে তাদের চলাচলের ক্ষেত্রেও সেটি উপকারে আসবে।

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘নদের বুক থেকে পরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করলে কোনো ক্ষতি হবে না। তবে অপরিকল্পিতভাবে উত্তোলন করলে তা ভাঙনের কারণ হবে। এর আগেও, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে নদের ভাঙনে অনেক বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগান ও স্থাপনার ক্ষতি হয়েছে। নদের বুক থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তা প্রতিহত করা হবে।’

রৌমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

2h ago