৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশাবাদ

গড়ে আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (এনইসি) সভায় পরিকল্পনাটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

গড়ে আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (এনইসি) সভায় পরিকল্পনাটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরিকল্পনা কমিশন থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নলালিত দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) গ্রহণ করেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনায় বিধৃত অর্থনৈতিক ও সামাজিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ২০২১-২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চুড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করেছে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হচ্ছে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহিতব্য চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়নের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর অভীষ্ট ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়নে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা এবং কোভিড-১৯’র কারণে সৃষ্ট বিরুপ প্রভাব মোকাবিলা বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা ও কোভিড-১৯’র ফলে সৃষ্ট সাময়িক বেকারত্বসহ বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শ্রমবাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিতকরণ, আয় বৈষম্য হ্রাস, সমন্বিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, টেকসই নগরায়ণ, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একইসঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিশেষত শিক্ষাকে ক্ষমতায়নের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, সেজন্য শিক্ষাকে সবার জন্য উন্মুক্ত এবং কারিগরি ও শিক্ষার গুণগত মানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন কৌশল ও কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পরিকল্পনায় ২০২৫ সাল নাগাদ কর-জিডিপির অনুপাত বর্তমানের ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশে উন্নীত করার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য শুল্কের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসকরণ— এই দুইটি লক্ষ্য অর্জন করার নিমিত্ত রাজস্ব আইন অধিকতর সংস্কার এবং কর প্রশাসনের আধুনিকায়ণ ও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বার্ষিক গড়ে আট শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ২০২৫ সাল নাগাদ ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে উন্নীত হবে। পরিকল্পনা মেয়াদে ১১ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে ৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন। এ সময়ে শ্রমবাজারে যুক্ত হবে ৭ দশমিক ৮১ মিলিয়ন শ্রমশক্তি। পরিকল্পনা মেয়াদে মাথাগুনতি দারিদ্র্য হার ২০২৫ সাল নাগাদ ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কৌশল ও কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০২১ অর্থবছরের অর্থমূল্যে মোট ৬৪৯৫৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকার প্রয়োজন হবে। তন্মধ্যে সরকারি খাত থেকে ১২৩০১ দশমিক ২ বিলিয়ন টাকা (১৮ দশমিক ৯ শতাংশ) এবং ব্যক্তিখাত থেকে ৫২৬৫৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা (৮১ দশমিক ১ শতাংশ) অর্থায়নের প্রাক্কলন করা হয়েছে। মোট প্রাক্কলিত ৬৪৯৫৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৫৭৪৮৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা (৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৭৪৭৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা (১১ দশমিক ৫ শতাংশ) সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago