ইরানের নিজস্ব ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু
নিজ দেশের গবেষকদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘কোভিরান বারেকাত’র ট্রায়াল শুরু করেছে ইরান।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইরানের ভ্যাকসিনটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
গত মঙ্গলবার থেকে এই ট্রায়াল শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় ইরান সরকারের টিমের প্রধান মোহাম্মদ মোখবারের মেয়ে তাইয়েবেহ মোখবার স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে প্রথম ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
তাইয়েবেহ মোখবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি ভীষণ খুশি। কেবল এজন্য না যে আমিই প্রথম, আমি খুশি কারণ আমার দেশে এই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াটি এতো ভালোভাবে এতোদূর এগিয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাঈদ নামাকি ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সভাপতি সোরেনা সাত্তারিসহ ওই অনুষ্ঠানে আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী নামাকি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা মনে করি না যে আমরা অন্যদের থেকে আলাদা। আর এ কারণেই আমরা আমাদের পরিবার সদস্যদের এই ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছি।’
প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি ইরানি ভ্যাকসিন পরীক্ষা করতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
প্রতিবেদন মতে, প্রথম দফায় ৫৬ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হতে ৪৫ থেকে ৬০ দিন লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শিফা ফারমেডের তৈরি ‘কোভিরান বারেকাত’সহ ইরানে আটটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে।
দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, অন্য সাতটি ভ্যাকসিন আগামী ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে প্রাণিদেহে পরীক্ষা শেষ করবে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান করোনার ভ্যাকসিন পেতে বাধার মুখে পড়ছে।
গত শুক্রবার ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) আওতাধীন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’ থেকে ১৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়ার একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে ইরান।
এছাড়াও, ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান করিম হেমমতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরোপকারীরা ইরানকে ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের দেড় লাখ ডোজ পাঠিয়েছেন।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইরানে ১২ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ৫৫ হাজার ৯৫ জন।
Comments