নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ইউপি সদস্য সোহাগের জামিন

দেশটাকে তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন
স্টার ফাইল ফটো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে (৪৮) জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগ। আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোম্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।

মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবী অজি উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আদালত মোয়াজ্জেম হোসেনকে জামিন দিয়েছেন। মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ছয় মাসের সাজা হতে পারে। ইতোমধ্যে তিনি তিন মাস কারাভোগ করেছেন। সেই বিবেচনায় তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগ এই রায় বাতিল না করলে তিনি মুক্তি পাবেন।’

এই মামলার ১৪ আসামির মধ্যে ১০ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন— বলেন মোয়াজ্জেম হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বড় খালপাড় এলাকায় ঘরে ঢুকে এক নারীকে অপবাদ দিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন একদল তরুণ। সে সময় ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেন তারা। ঘটনার এক মাস দুই দিন পর ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ভুক্তভোগী নারী ১৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে ঘরে ঢুকে ওই নারীর স্বামীকে অন্য কক্ষে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে নির্যাতন করেন। ওই ঘটনার ভিডিওচিত্রও ধারণ করেন তারা। প্রায় এক মাস ধরে তারা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন।

গত ৫ অক্টোবর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে মামলার আলামত হিসিবে ভিডিও ফুটেজের একটি কপি সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন।

ওই দিনই নারায়ণগঞ্জের আদমজী এলাকায় র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলার নয় আসামিই দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য এবং দেলোয়ারের নির্দেশেই এ ঘটনা ঘটেছে।

গত ১৫ নভেম্বর মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তারা হলেন— দেলোয়ার হোসেন দেলু (২৬), জামাল উদ্দিন (৫২), নূর হোসেন বাদল (২২), আব্দুর রহিম (২০), মোহম্মদ আলী প্রকাশ আবুল কালাম (২৩), সামছুদ্দিন সুমন (৩২), ইস্রাফিল হোসেন মিয়া (২১), মাইন উদ্দিন সাজু (২১), নূর হোসেন রাসেল (২৯), আনোয়ার হোসেন সোহাগ (২৪), আব্দুর রব চৌধুরী (৫০), মোস্তাফিজুর রহমান (১৯), মিজানুর রহমান (২০), মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ (৪৫)।

আরও পড়ুন

নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার আরও ২

নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ভিডিও ফুটেজ সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

৯ আসামি দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য, দেলোয়ারের নির্দেশে ঘটনা: র‍্যাব

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

Sources from the CA office confirmed that the meeting will take place at the State Guest House, Jamuna

1h ago