পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, পরিবারের দাবি ‘নির্যাতনে হত্যা’

বরিশালে মাদক মামলায় কারাগারে পাঠানো এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যখন তিনি মারা যান তখন তার কুচকি থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।
রেজাউল করিম রেজা। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালে মাদক মামলায় কারাগারে পাঠানো এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যখন তিনি মারা যান তখন তার কুচকি থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত রেজাউল করিম রেজা (৩০) বরিশাল ল কলেজের ছাত্র। নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের বাসিন্দা ইউনুছ মুন্সীর ছেলে তিনি। পুলিশের দাবি, রেজা মাদক বিক্রিতে জড়িত এবং নিজেও মাদকসেবী। মাদকাসক্ত হওয়ায় সে অসুস্থ ছিল। কারাগারের বাথরুমে পড়ে গিয়ে আঘাত লেগে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুফা আব্দুল বারেক হাওলাদার জানান, ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহি রেজাউলকে চায়ের দোকান থেকে আটক করেন। নিয়ে যাওয়ার আগে তার পকেট থেকে একটি নেশার ইনজেকশন পাওয়ার কথা দাবি করেন এসআই মাহি।

আটকের সময় রেজাউল সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল দাবি করে তার বাবা ইউনুস মুন্সী বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আমাকে পুলিশ ফোন করে জানায়, রেজাউল বাথরুমে পড়ে রক্তক্ষরণ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’

আব্দুল বারেক বলেন, আমরা হাসপাতালে গিয়ে রেজাউলের পা, বুক ঘাড়ে লাঠি দিয়ে আঘাতের জখম পেয়েছি। তার পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

রেজাউলের ভাই আজিজুল করিম বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই পুলিশ রেজাউলকে ধরে। তার সঙ্গে আরও দুজকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা ছিল পুলিশের। সেটা করতে না পেরে নির্যাতন চালানো হয়েছে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, রেজাউলকে বাঁচাতে সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে। তার দুই পায়ের মধ্যখান থেকে রক্তক্ষরণ থামানো যাচ্ছিল না। তাকে রক্তও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য বাঁচানো যায়নি। তবে জখমের কথা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যায় না।

বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, রেজাউলকে যখন ৩০ তারিখ জেলে পাঠানো হয় তখন আমাদের ডাক্তাররা তাকে দেখে কিছুটা অসুস্থ মনে করে জেলা হাসপাতালে পাঠায়। তার ওয়ারেন্টে দুই পায়ের কুচকিতে জখম আছে বলে লেখা রয়েছে। শুক্রবার তার পায়ের আর্টারি থেকে রক্তপাত শুরু হলে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ও স্বজনদের খবর দেওয়া হয়।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মনজুর হোসেনের দাবি, ‘রেজাউলকে চার অ্যাম্পুল ইনজেকশন ও ১৩৮ গ্রাম গাজাসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে ১০০ পারসেন্ট মাদকসেবী ও বিক্রেতা। এসব কারণে সে অসুস্থ ছিল। পুলিশ তার ওপর কোনো নির্যাতন করেনি।’

রেজাউলের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উপপুলিশ কমিশনারকে (দক্ষিণ) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করার কথা জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।

Comments

The Daily Star  | English
Digital Health Cards are to be introduced soon in Bangladesh hospitals.

Government plans digital health cards for all citizens

The government has taken an initiative to introduce digital health cards for all citizens, in a bid to eradicate the need of preserving physical prescription and test files by creating a unified digital database.

1h ago