আবারও বিদ্রোহীর প্যাঁচে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তিনি তো প্রার্থী আছেনই, সঙ্গে আছেন যিনি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী হয়ে মেয়র পদে জয় লাভ করেছিলেন, সেই বর্তমান মেয়রও। জয়ের হিসাব নিয়ে তাই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
ছবি: স্টার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তিনি তো প্রার্থী আছেনই, সঙ্গে আছেন যিনি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী হয়ে মেয়র পদে জয় লাভ করেছিলেন, সেই বর্তমান মেয়রও। জয়ের হিসাব নিয়ে তাই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ভোটে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বলে মনে করছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। বিএনপির প্রার্থী কামাল উদ্দিন আহমেদ জুনেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে আমি জয়ী হব। কারণ, এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুই জন।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ। তিনি আওয়ামী লীগ উপজেলা কমিটির নেতা। অপরদিকে, তৃতীয় বারের মতো মেয়র পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফি আলম ইউনুছ। তার প্রতীক নারকেল গাছ। তিনি আওয়ামী লীগ উপজেলা কমিটির সদস্য।

গত বছর নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফি আহমদ সলমান। তবে সেই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ নেতা শফি আলম ইউনুছ।

চতুর্থ বারের মতো নির্বাচন করছেন বিএনপি মনোনীত ও কুলাউড়া পৌরসভার দুই বারের সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ধানের শীষ প্রতীকে। প্রথম বারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মো. শাজান মিয়া জগ মার্কা নিয়ে। তিনি কাতার প্রবাসী কমিউনিটি নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী ডেইলি স্টারকে বলেছেন, নেতা-কর্মীদের অনেকে নিজেদের কোন্দলে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এতে সাধারণ ভোটাররা দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন।

তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘বিদ্রোহী যিনি, তিনি তো প্রকৃত আওয়ামী লীগার না। উনি একজন ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের ভোটে উনি কোন প্রভাব ফেলতে পারবেন না। বিভিন্ন সময় আমি নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলাম। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমি মানুষের সঙ্গেই আছি। আমি লক্ষ্য করেছি মানুষ পরিবর্তন চায়।’

তার দাবি, ‘দলের সবাই আমার সঙ্গে আছেন।’

নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গতবার নির্বাচনে আমি নৌকা মার্কা পেয়েছিলাম। কিন্তু, পরে কিছু অদৃশ্য কারণে নৌকা মার্কা পাইনি। তখনকার আওয়ামী লীগ নেতারাই আমাকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমি এখনো আছি।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এবারও বিপুল ভোটে আমার জয় হবে।’

কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী এখনো আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে আছেন। বিদ্রোহীকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে খুব তাড়াতাড়ি।’

আওয়ামী লীগ নেতারা প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কথা বললেও গোপনে বিদ্রোহীর পক্ষেই আছেন এমন অভিযোগ খণ্ডন করে তিনি বলেছেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীর এমন কোনো অভ্যাস নাই। দলে বহু লোক থাকে। দলছুট মানুষ থাকে। গোপনে কে কতকিছু করে সেটা আমরা ধরছি না। দলের কোনো নেতাকর্মী দলের বিরুদ্ধে নেই।’

কুলাউড়া পৌরসভায় মেয়র পদে চার প্রার্থী ছাড়াও কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি এই পৌরসভায় ভোট হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Switzerland assures cooperation in repatriating illegal assets of Bangladeshis

Switzerland has pledged to fully cooperate in repatriating illegal money deposited by Bangladeshi nationals in Swiss banks, in accordance with international standards and procedures

1h ago