যতদূর জানি ভারতের নিষেধাজ্ঞা আমাদের চুক্তিকে ব্যাঘাত করবে না: স্বাস্থ্যসচিব
ভারতের ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত যতদূর আমি জানি, এটি আমাদের চুক্তিকে কোনো ব্যাঘাত করবে না।’
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন ফোন করলাম ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারকে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, আমরা যে চুক্তি করেছি, এটার ফিন্যান্সিশিয়াল কতগুলো ট্রান্সকশন, কীভাবে টাকাটা যাবে, কীভাবে ব্যাংক গ্যারান্টি দিবে, ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে আমরা কত টাকা দেবো, যেহেতু এই কাজটা হয়েছে জিটুজি (সরকার থেকে সরকার), এর সঙ্গে যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে, সেটা ভারত সরকার বলেছে শুধু বাণিজ্যিক কার্যকলাপের ওপর। আমাদেরগুলোতে না। কারণ, এটা (চুক্তিটা) সরকার টু সরকার।’
তিনি জানান, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের কথা বলেছেন। মানে ভারত সরকারও বিষয়টি জানে। ‘আমরা যখন চুক্তিটি করি, সেখানে ভারতীয় হাইকমিশনার নিজে উপস্থিতি ছিলেন। কাজেই আমাদের বিষয়টি হলো জিটুজি। আর ভারত সরকার যে নিষেধাজ্ঞাটা দিয়েছে, সেটা হলো যে, তাদের (ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীদের) অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক কার্যকলাপ হবে না। ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এখন এটা পরিষ্কার করেছে।’
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘এতদিন যাবৎ সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া নিজের সরকারের কোনো অনুমোদন পায়নি। গতকাল তারা পেয়েছে। এখন সেরাম আবেদন করবে ডব্লিউএইচওর কাছে। ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করলে তিন সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন পাবে। যদি তিন সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন তারা নিয়ে আসতে পারে, তাহলে আমাদের সময় বলা ছিল ফেব্রুয়ারিতে পাব। তো ফেব্রুয়ারি আসতে তো এখনো তিন-চার সপ্তাহ আছেই বাকি। কাজেই দেরি হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এটা আমাদের ফরমালিটিজ অনুযায়ী যা যা করা দরকার, সেটা আপনারা বলেছেন আশঙ্কা করার মতো, একেবারে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার মতো এখনো কিছু আমাদের হয়নি বলে আমি মনে করছি। স্যারও (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) তাই মনে করছেন।’
‘আর আরও ফরমালিটিজ, যেগুলোর কথা আপনারা বলেছিলেন, যেমন: টাকাটা কবে যাবে, আমরা আজকেই সব ফরমালিটিজ শেষ করেছি। যাদের কাছ থেকে ব্যাংক গ্যারান্টি পেয়েছি, তাদেরকেই আমরা পেমেন্টটা দেবো। সেটা আজকেই হয়ে যাবে আশা করছি। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। এটি হয়ে যাবে। আর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) একটা পারমিশন লাগে। যেকোনো ওষুধ বাংলাদেশে আমদানি করতে গেলে, বিক্রি করতে গেলে, স্টক করতে গেলে, মানুষের শরীরে প্রয়োগ করতে গেলে, প্রত্যেকটার আগে ড্রাগ প্রশাসনের ডিজির কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এটিরও আমরা আজকে অনুমোদন দিয়েছি। আজকে দুপুরের মধ্যে চিঠি আসবে তাদের কাছ থেকে। সেই চিঠিটা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হবে। এর মানে হলো, যে ধরনের নিউজ টেলিভিশন স্ক্রলে হয়েছে, এটি আমাদের চুক্তিকে এখন পর্যন্ত যতদূর আমি জানি, আমাদেরটাকে কোনো ব্যাঘাত করবে না।’
ফেব্রুয়ারিতে ভ্যাকসিন পাচ্ছি কি না, ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তাই বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
আশ্বস্ত থাকতে পারি, আমরা চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে: বেক্সিমকো
ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
ভারতে কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন অনুমোদন
ভারতে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের অনুমোদন বাংলাদেশের জন্যেও সুসংবাদ
ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ব্যবহারের পক্ষে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ
যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন
যুক্তরাজ্যে ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বিতরণ
যুক্তরাজ্যে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন পেলেন ৯০ বছরের নারী
চীনের ভ্যাকসিন কবে আসবে ‘নিশ্চিত নয়’
অনুমোদন পেল ফাইজারের ভ্যাকসিন
‘অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পেতে কমপক্ষে আরও ২-৩ মাস সময় লাগবে’
Comments