ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ’

erfan-1.jpg
র‌্যাবের হাতে আটক ইরফান সেলিম। স্টার ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন চকবাজার থানা পুলিশ আজ আদালতে দাখিল করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার চূড়ান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা সন্দেহাতীতভাবে কোনো অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাইনি।’

তবে, ইরফান সেলিমের দেহরক্ষী মো. জাহিদুল মোল্লার বিরুদ্ধে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।

ইরফান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তার ওয়ার্ড এবং হাজী মো. সেলিমের নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন চকবাজার থানা।

অক্টোবরের শেষ দিকে সেলিমের বাসায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‍্যাব) অভিযানের পর, ইরফানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়।

অভিযানে জব্দকৃত অস্ত্র ও অবৈধ ডিভাইস ইরফানের কিনা জানতে চাইলে লালবাগ জোনের উপপুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘আমি কেবল বলতে পারি যে আমরা বিষয়টি তদন্ত করেছি এবং আমরা যা পেয়েছি সে অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

২৬ অক্টোবর র‌্যাব-৩ এর উপ-অতিরিক্ত পরিচালক মো. কাইয়ুম ইসলামের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) অনুযায়ী, ইরফান সেলিমের শয়নকক্ষ ও পাশের একটি কক্ষ থেকে অবৈধ অস্ত্র পাওয়া যায়।

মো. কাইয়ুম ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইরফান সেলিমের শয়নকক্ষে ঢুকে একটি কালো পিস্তল পেয়েছিলাম যার ব্যারেলের দৈর্ঘ্য ছয় ইঞ্চি ও বাট সাদা রঙের। সেটিতে দুই রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন ছিল। বুলেটের গায়ে “কেএফ” ও “৭ দশমিক ৬৫” লেখা ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনের পাঁচ তলায় “কন্ট্রোল রুম” নামে আরেকটি ঘরে ঢুকি আমরা। সেখানে দেয়ালে ঝুলানো এয়ারগান পাই। কাপড় রাখার ওয়ারড্রবের নীচের তাকে ১১ ইঞ্চি ও ১১ দশমিক চার ইঞ্চি দুটি ছোরা পাই। সাড়ে আট ইঞ্চি একটি চাইনিজ কুড়ালও পাই আমরা।’

তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ভবনে অভিযানের সময় সেখান থেকে ৩৮টি কালো ওয়াকিটকি, এক জোড়া হাতকড়া, একটি ড্রোন ক্যামেরা পাওয়া যায়, যেগুলো এফআইআর এ ছিল না। মদিনা আশিক টাওয়ারের ১৫ তলায় অভিযানের সময় সাংবাদিকরা সেগুলো দেখেছিলেন। এ ছাড়াও ছিল সার্জিক্যাল টেপ, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি পর্যবেক্ষণের জন্য ডিভাইস, মোটা দড়ি।

র‌্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের তখন বলেছিলেন যে ভবনের ১৫ তলা ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার হয়।

তিনি বলেন, ‘ইরফান সেলিমের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা এই টর্চার সেল সম্পর্কে জানতে পারি।’

অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম বলেছিলেন, ‘এখানে লোকেদের নিয়ে এসে ইরফান নির্যাতন করত।’

ইরফানকে গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদকারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রগুলো দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছিল যে ইরফান তার ব্যবসায় কার্যক্রম ও এলাকার ওপর নজরদারি করতে একটি ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কিং সিস্টেম এবং ক্লোজ-সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন।

সূত্রগুলো জানিয়েছিল, ১০ কিলোমিটার এলাকায় তার ওয়াকিটকির নেটওয়ার্ক ছিল। ডিভাইসগুলো বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সি সিস্টেমে পরিচালিত হওয়ায়, অন্য কোনো সরকারি সংস্থার নজরে আসেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Air freight capacity to increase

The move comes as Bangladesh's garment exporters face a major challenge in handling urgent international shipments after India abruptly closed a widely-used air cargo transhipment route

9h ago