নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ. লীগ সেক্রেটারির বিরুদ্ধে মেয়র আইভীর মামলা
ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগে মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি খোকন সাহার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে মেয়র আইভী বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা ফরিদুল মিরাজ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ফরিদুল মিরাজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আদালত আর্জি গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ মামলায় অপর আসামি হিন্দু লাইভস মেটার ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলের প্রকাশক ও সঞ্চালক কানাডা প্রবাসী প্রদীপ দাস।’
মামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রদীপ দাসের পরিচালনাধীন ‘হিন্দুস লাইভস মেটার্স’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এ চ্যানেলের মূল উদ্দেশ্য এসব প্রচার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা।’
চ্যানেলটিতে গত ২৩ নভেম্বর ‘নারায়ণগঞ্জ মেয়র আইভীকে খোকন সাহা: হাজার কোটি টাকা মূল্যের হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি ফিরিয়ে দিন ও ১ হাজার কোটি টাকার মূল্যের হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি মেয়র আইভীর পরিবারের দখলে। মন্দিরের সেবায়েত গুম। আতঙ্কে হিন্দুরা’ শীর্ষক শিরোনামে ভিডিও আপলোড হয়। ওই ভিডিওতে খোকন সাহাও বক্তব্য রাখেন। মূলত প্রদীপ এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করে।
ভিডিওতে খোকন সাহা বলেন, ‘মেয়র আইভী হিন্দুদের ভোট নেয়। নিয়ে কালীপূজা করে সিন্দুর দিয়ে কালী মাকে প্রণাম করে। আমি হিন্দু সমাজকে একতাবদ্ধ করার চেষ্টা করছি এবং বলেছি যারা দেবোত্তর সম্পত্তি গ্রাস করে তাদেরকে আপনারা ভোট দিবেন না। যারা দেবোত্তর সম্পত্তি খায় তাদের যেন জননেত্রী শেখ হাসিনা নমিনেশন না দেয় এবং হিন্দু সম্প্রদায়কে বলছি, যারা দেবোত্তর সম্পত্তি খায় তাদেরকে আপনারা ভোট দিবেন না।’
ফরিদুল মিরাজ আরও বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হলো আগামী মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়রের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে খোকন সাহা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রচার করছে। এতে মেয়র ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। কথিত সম্পত্তি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে বিচারাধীন মামলায় মেয়র আইভী কোনো পক্ষ না। ফলে প্রদীপ ও খোকন সাহা মিলে মেয়রকে অপমান ও অপদস্থ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে ডিজিটাল আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ করছেন।’
এ বিষয়ে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি আজকে সাইবার আইনে একটা মামলা করেছি। সেই মামলার প্রধান আসামি প্রদীপ দাস যিনি এ চ্যানেল খুলেছেন আর দ্বিতীয় আসামি খোকন সাহা। কারণ ওনারা আমার নামে যে মিথ্যা অপবাদগুলো দিয়েছে তার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। অর্থাৎ জিউস পুকুর আমার নানা কিনেছে। আর ইনি বলেছেন আমি ১১শ কোটি টাকার মালিক এবং হিন্দুদের সম্পত্তি আমি দখল করছি। যার বিন্দু মাত্র সংশ্লিষ্টতা আমার সঙ্গে নেই, তাই আমি এ মামলা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ একটি অসাম্প্রদায়িক শহর। আমি ১৭ বছর ধরে কাজ করছি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে। আমি প্রচুর জায়গা উদ্ধার করে শ্মশানে ও বিভিন্ন মন্দিরে দিয়েছে। সেখানে আমার বিরুদ্ধে এতো বড় মিথ্যা অভিযোগ আনার কারণ সামনে নির্বাচনকে রেখে একটি কুচক্রী মহল অত্যন্ত সুকৌশলে এখানে হিন্দু মুসলিমের মধ্যে সম্প্রীতির ফাটল ধরাতে চেষ্টা করছেন।’
Comments